শামীম আহসান মল্লিক ২২ মে ২০২৫ , ৪:১১:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ভুলেভরা প্রশ্নপত্র, নাম মাত্র শিক্ষা সপ্তাহ পালন, শিক্ষকদের সাথে দুরব্যবহার, বদলী বানিজ্য, শিক্ষা কার্যক্রমে সরকারি অর্থ সঠিক ভাবে ব্যায় না করাসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত টিম মাঠে নেমেছে।
মহাপরিচারক শিক্ষা অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা ও বাগেরহাট জেলা শিক্ষা অধিদপ্তরের পৃথক ৩টি স্মারকে উক্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশনা প্রদান করেছেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। যার প্রেক্ষিতে আগামী ২৫ মে রবিবার সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুকুমার মিত্র স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিজ কার্যালয় উপস্থিত থাকার নির্দেশনা প্রদান করেন, একই চিঠিতে অভিযোগকারি শিক্ষক ও তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমান এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা মান উন্নয়নে সরকারিভাবে বরাদ্ধকৃত ক্ষুদ্র মেরামত, রুটিন মেন্টেনেন্স ও স্লিপ বরাদ্ধের টাকা উত্তোলনের বিল পাশ করতে এ কর্মকর্তাকে দিতে হয় ধার্যকৃত একটি নিদিষ্ট অংকের অর্থ, এরকম অভিযোগ রয়েছে এ কর্মকতার বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষকদের।
এছাড়াও ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের অর্থ বরাদ্ধ, অফিসের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের পোশাক বিল নামে অর্থ উত্তোলন করে নিজেই পকেটস্ত করেছেন। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের শিক্ষা সপ্তাহ পালনের ক্ষেত্রে শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত না করে নামেমাত্র পালন করেছেন এমন অভিযোগ রয়েছে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ সকল অবৈধ অর্থের বিনিময় খুলনা দক্ষিণ টুটপাড়া ছোট খাল পাড়ে রয়েছে ছয় তালা বিশিষ্ট একটি বাড়ী যার ভিতরে বাহিরে লাগানো টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত।
এদিকে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগকারি ১৭৫নং তাফালবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন সময় অফিসিয়াল কাজে আশা শিক্ষকদের সাথে দুরব্যবহার করেন তার কথার অবাদ্ধ হলে শিক্ষকদের হয়রানির শিকার হতে হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাসীন ফ্যাসিষ্টদের ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তাকেও লাঞ্চিত হতে হয়েছেন মেয়ের সামনে এ কর্মকর্তার হাতে। দুর্নীতির সাথে জড়িত এ শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্ত পূর্বক অইনগত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট।
এ বিষয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। তবে, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে তাকে ২৫ মে অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
এ সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুকুমার মিত্র তদন্তের সত্যতা শিকার করে বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার শেখ মুস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩টি স্মারকে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় তদন্ত করা হচ্ছে। আগামী ২৫ মে এ কর্মকর্তাসহ তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্টদের শিক্ষা অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।