প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২৫ , ৩:২১:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
রাজবাড়ীতে কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাম-গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আহবানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক চত্ত¡রে এই পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পুনরাবৃত্তি ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার ডানপন্থী গোষ্ঠীর আস্পালন রুখতে গণমানুষের ঐক্য ও সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে একটি বাম-গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে আগামি ১৪ নভেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। সমাবেশ সফল করার লক্ষে সারা দেশে পথসভা ও ঝটিকা সফর করছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তারই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ীতেও এই পথা সভার আয়োজন করা হয়। এর আগে রবিবার জেলার নের্তৃবৃন্দকে নিয়ে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড আব্দুস সামাদ মিয়া। এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জলি তালুকদার, সদস্য পরেশ কর, মানবেন্দ্র দেব, বাংলাদেশ জাসদ রাজবাড়ী জেলা কমিটির সভাপতি স্বপন কুমার দাস, জেলা সিপিবির পার্টির সাধারণ সম্পাদক ধীরেন্দ্র নাথ দাস, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অরুণ কুমার সরকার, জেলা ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক শুশান্ত কুমার রায়, জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার মন্ডল। সভায় সঞ্চালনা করেন জেলা সিপিবির সদস্য এজাজ আহম্মেদ।
বক্তারা বলেন, ফ্যাস্টিস দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ১৫ বছর রাজপথে থেকে লড়াই করেছে সিপিবিসহ বামপন্থী রাজনৈতিক দল। ২০২৪ সালে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এসময় ড. মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন গঠন হয়। আমাদেরও সমর্থন ছিলো এই সরাকারের প্রতি। আমাদের আশা ছিলো এই সরকার সাধারণ মানুষের সরকার হবে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকেই দেশ বিরুধী ও দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে।
এই গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিক শ্রেণির মানুষের ভুমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় বসার পরপরই শ্রমিকের বুকে গুলি চালিয়েছে। সরকার মানবিক করিডরের নামে দেশকে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত করার পায়তারা করছে। দেশের লাভজনক চট্টগ্রামের তিনটি বন্দর বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে যা এই সরকারের কাজ নয়। এই সরকারের দায়িত্ব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। আগামি ফেব্রæয়ারি মাসে নির্বাচনে কথা থাকলেই দেশের মানুষ সন্ধিহানে রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্খা ছিল এই সরকার তা থেকে অনেক দূরে চলে গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, এই দেশে আজ পর্যন্ত যতগুলো সরকার ক্ষমতায় এসেছে কোন সরকারই সাধারণ মানুষ কিংবা শ্রমিক শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করেনি। শ্রমিক শ্রেণির মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। শ্রমিকের সকল অধিকার আদায়ের জন্য কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থীরা রাজপথে থেকে লড়াই করে যাচ্ছে। তাই আগামি নির্বাচনে শ্রমিকের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে হবে।
এ জন্য সকল মানুষকে লাল ঝান্ডার নিচে সমবেত হওয়ার আহবান জানান তারা। পথসভা শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহর প্রদিক্ষণ করে জেলা উদীচী কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

















