প্রতিনিধি ১৬ অক্টোবর ২০২০ , ১২:৫৪:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ অনলাইন:
দীর্ঘশ্বাস নিয়ে যেতে হয়/সবাইকে/অজানা গন্তব্যে/হঠাৎ ডেকে ওঠে নাম না জানা পাখি/অজান্তেই চমকে উঠি/জীবন, ফুরালো নাকি!/এমনি করে সবাই যাবে, যেতে হবে…
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এমন অনেক কবিতার জন্মদাতা কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৫তম জন্মদিন আজ।
তারুণ্যদীপ্ত এই কবির জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বাবার কর্মস্থল সূত্রে বরিশালের আমানতগঞ্জে। তার গ্রামের বাড়ি ছিল বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠেখালী।
মাত্র ৩৫ বছর বেঁচে ছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ের জীবনে এত প্রাণ, এত উদ্দামতা, এত গতিময়তা, এত দ্রোহ আর দেখা যায়নি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ বাংলাদেশের কবিতায় এক অবিস্মরণীয় নাম। কবিতা, গান আর জীবন যাপনের জন্য স্বল্প সময় পেয়েছিলেন তিনি। তাতেই রীতিমত ঝড় তুলেছেন। তার সৃষ্টি দিনে দিনে আরো উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিচ্ছে তরুণদের কাছে।
কলেজ জীবনেই সাহিত্যচর্চা আর লেখালেখির হাতেখড়ি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনীতি, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য আন্দোলনে নিজেকে ব্যস্ত রেখে অনিয়মিত ছিলেন একাডেমিক শিক্ষায়।
১৯৭৮ সালে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। রুদ্রের প্রথম কাব্যগ্রন্থের ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কবিতাটি এখনো পাঠকের মুখে মুখে ফেরে।
কবিতার সঙ্গে ঘর করতে গিয়েই আরেক কবি তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে পরিচয়-প্রনয়। বিয়ে করেও ৬ বছরেই টানেন সম্পর্কের ইতি। ভীষণ একাকিত্বের জীবন ছিল রুদ্রের। রোগে ভুগছিলেন। সুস্থ হয়েও হুট করে চলে যান না ফেরার দেশে।
স্বল্পায়ু’র জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য ও অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ’ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পর পর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।