প্রতিনিধি ২৫ এপ্রিল ২০২০ , ১:৫৯:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালীন সময়েও রমজান মাসকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় ৯টি পণ্যের দাম বেড়েছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে- চিনি, রসুন, পেঁয়াজ, আদা, মসুর ডাল, মুরগি, শুকনা মরিচ, পাম অয়েল এবং ছোলা।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে রোজা শুরুর আগে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) এসব পণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবেদন তৈরি করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৬টি মন্ত্রণালয়, অধিদফতর অথবা কমিটি বরাবর প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়েছে।
টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, রোজার আগে গত এক সপ্তাহে সব থেকে বেশি দাম বেড়েছে মুরগির। এই পণ্যটির দাম এক সপ্তাহে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়েছে। শতকরা হিসাবে সব থেকে কম দাম বেড়েছে আদার। এই পণ্যটির দাম বেড়েছে দুই শতাংশের কিছু বেশি।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ানবাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যাম বাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভী বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা এবং মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দামের তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৭০ শতাংশ। বর্তমানে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা।
দেশি রসুনের দাম রোজার আগে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং পেঁয়াজের দাম ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ থেকে ১২০ টাকা। আর পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
করোনার প্রভাবে আগেই অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া আদার দাম রোজার টানে আরও বেড়েছে। দেশি আদার দাম ২ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং আমদানি করা আদার দাম ১২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।
সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, বর্তমানে দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
রোজা উপলক্ষে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে বড় দানার মসুর ডালের। এক সপ্তাহে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পণ্যটির দাম এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা। এর সঙ্গে বেড়েছে মাঝারি দানার মসুর ডালের দামও। ৮০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাঝারি দানার মসুর ডালের দাম ২০ শতাংশ বেড়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকা হয়েছে।
রোজাকে কেন্দ্র করে সব থেকে বেশি বেড়েছে দেশি মুরগির দাম। টিসিবির হিসাবে, এক সপ্তাহে দেশি মুরগির দাম বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এর সঙ্গে বেড়েছে বয়লার মুরগির দাম। বয়লার মুরগির কেজি সপ্তাহের ব্যবধানে ১১ দমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা হয়েছে।
টিসিবি বলছে, দাম বাড়ার এই তালিকায় শামিল হয়েছে দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের শুকনা মরিচ। দেশি শুকনা মরিচের কেজি ২২ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর আমদানি করা শুকনা মরিচের দাম ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রোজার অনেকটাই অপরিহার্য আরেক পণ্য ছোলার দাম টিসিবির হিসাবে বেড়েছে ৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। এক সপ্তাহে আগে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ছোলার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড় ৮৫ টাকা হয়েছে।
পাম অয়েল (লুজ) ও পাম অয়েলের (সুপার) দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে বলে টিসিবির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। লুজ পাম অয়েলের দাম বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগে ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা ছিল। আর সুপার পাম অয়েলের দাম বেড়ে হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।