প্রতিনিধি ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:৫৬:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ
মোহাম্মদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) :
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে প্রায় তিন বছর ধরে নিজ সন্তানকে পায়ে লোহার শিকল ও তালা দিয়ে বেঁধে রেখেছেন অসহায় পিতা-মাতা। ছেলের চিকিৎসার টাকা খরচ বিলাসিতা মনে করে দিনের পর দিন বেঁধে রেখেছে সন্তানকে তারা। চিরিরবন্দর উপজেলার সাতনালা ইউনিয়নের খামার সাতনালা গ্রামের বেরু বাড়ি এলাকার আনোয়ার হোসেনের ২ ছেলেই প্রতিবন্ধি। তাদের একজন মানিক হোসেন (২১)। সে জন্ম থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন ও বাক প্রতিবন্ধি। তাকে প্রায় ৩ বছর ধরে পায়ে লোহার শিকল ও তালা দিয়ে বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা ও তার পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, মানিক হোসেন জন্ম থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন ও বাক প্রতিবন্ধি। প্রায় ৩ বছর ধরে পায়ে লোহার শিকল বন্দী জীবন কাটছে তার। মানসিক ভারসাম্য হীনতার কারণে আর দশটা শিশুর মতো প্রাণোচ্ছল শৈশব পায়নি সে। অর্থাভাবে তার চিকিৎসাও বন্ধ রয়েছে। বড় ২ সন্তানের দুশ্চিন্তায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটছে সেই পিতামাতার।
তার পিতা আনোয়ার হোসেন জানান, তার বৃদ্ধা মাতা, স্বামী-স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে পরিবারে ৮ জন সদস্য। সে টিউবওয়েলের মিস্ত্রির সহকারি হিসেবে কাজ করেন। তিনিই একমাত্র সংসারের উপার্জনকারী ব্যক্তি। সম্পদ বলতে ভিটে মাটি ছাড়া আর কিছুই নেই। তার আয়-রোজগারেই চলে ৮ জনের সংসারের যাবতীয় খরচ। মানিক সবার বড়। তার আরেক ছোট ভাই মাহফুজুুর রহমান (১৪)। সেও শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধি।
বর্তমানে কাজ-কর্মও তেমন নেই। তাই বাধ্য হয়ে ছেলের চিকিৎসা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। মা মরিয়ম বেগম জানান, বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার-কবিরাজের নিকট চিকিৎসা করিয়েও তার অবস্থার উন্নতি করা যায়নি। চিকিৎসা করালে সে কিছুটা সুস্থ থাকে। বর্তমানে অর্থাভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, কেউ আমার ছেলের চিকিৎসায় যদি এগিয়ে আসতেন, তবে সে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারতো। আনোয়ারের পরিবারের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা এলাকার মানুষের।