প্রতিনিধি ২৮ মে ২০২০ , ৪:০১:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ
শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : অবশেষে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে শরণখোলা উপজেলার সাউথখালীর বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ নির্মান করা হবে। সাউথখালীবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখ এ বাঁধ দ্রুত নির্মানের লক্ষ্যে ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বুধবার রাত ৮টায় সাউথখালীর ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ পরিদর্শনকালে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এ সিদ্ধান্তে কথা জানান।
এছাড়া বগী থেকে গাবতলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার নদী শাসন, দ্রুত রিংবাঁধ নির্মান এবং পরবর্তীতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের ঘোষনা দেন। প্রতিমন্ত্রীর এ ঘোষনায় এলাকাবাসী সস্তির নিশ্বাষ ফেলেন। এ সময় তার সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাডঃ আমিরুল আলম মিলন উপস্থিত ছিলেন। স্পীডবোর্ডে প্রতিমন্ত্রীর সাউথখালীতে বিকেল ৫টায় আসার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারনে তিনি রাত ৮টায় এসে পৌছান।
বাঁধ পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী সাউথখালীর গাবতলায় এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে যেখানে ভাঙ্গন আছে সেখানে দ্রæত বাঁধ নির্মান এবং ভাঙ্গন রোধ করার। দেশে যতগুলো নদী ভাঙ্গন আছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সেসব এলাকার ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প গ্রহন করেছি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশ প্রেমিক, কর্তব্যপরায়ন ও দায়িত্বশীল। তাই তাদের দিয়ে দ্রæত বাঁধ নির্মান করা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার তার মন্ত্রনালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এলাকাবাসীকে ভবিষ্যতে আর যাতে দুঃখ দুর্দশায় পড়তে না হয় এবং নদী ভাঙ্গন না হয় সে লক্ষ্যে সাউথখালীতে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান করা হবে। নির্মিত বাঁধের ভিতর ও বাইরে বনায়ন করা হবে। এজন্য জমি অধিগ্রহন করতে হবে। তাই তিনি এলাকাবাসীর সহযোগীতা কামনা করেন।
এসময় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, পুলিশ সুপার পঙ্কচ চন্দ্র রায়, সিআরপির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম, পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নাহিদুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শহিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন মুক্তা, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হক হায়দার, সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, শ্রমিকলীগের সভাপতি মেজবা উদ্দিন খোকনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তিনি পার্শবর্তী মোরেলগঞ্জ উপজেলার নির্মানাধীন বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন।
এলাকাবাসী জানান, ঘুর্ণঝড় সিডরে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পুণঃনির্মানের দাবীর প্রেক্ষিতে প্রায় চারশত কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারী চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএইচডাবিø¦ই ৬২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করেন। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ সাউথখালীর দুই কিলোমিটার বাঁধ নির্মানের কাজ না করে অন্য এলাকার কাজ আগে শেষ করেন। এরপর কাজের মেয়াদ দুই দফা বৃদ্ধি করলেও সাউথখালীতে বাঁধের মূলকাজ না করে রিংবাঁধ দিয়ে ভাঙ্গন ঠোকানোর ব্যার্থ চেষ্টা করা হয়। ফলে প্রতি বছর বাঁধ ভেঙ্গে ৪/৫টি গ্রাম প্লাবিত হতে থাকে। সর্বশেষ ঘুর্ণিঝড় আম্পানে বাঁধের দুই কিলোমিটার অংশের ৮০ ভাগ ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ওই সময় থেকে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখনো শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে।