প্রতিনিধি ১২ মে ২০২০ , ৪:০০:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : পূর্ণিমার ভরা কাটাল। বলেশ্বর নদীতে জোয়ারের পানি ফুসে উঠছে। শরণখোলার সাউথখালীর দুঃখ ফাটল ধরা বেড়িবাঁধ কখন যে ভেঙ্গে পড়ে সেই দুশ্চিন্তায় গ্রামবাসী। শনিবার ঠিক রাত ৮টায় প্রায় দুইশত মিটার এলাকা নিয়ে বাঁধের গাবতলার অংশ ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত গ্রামবাসী ছোটাছুটি শুরু করেছে। খবর পেয়ে রাত ৯টার মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন।
কাল বিলম্ব না করে তাৎক্ষনিকভাবে বেড়িবাঁধ মেরামতের উদ্যোগ গ্রহন করলেন। তার কথা প্লাবিত হওয়ার আগে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধে মাটি ফেলতে হবে। প্রথমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালেন তিনি। এরপর খবর দিলেন নির্মানাধীন বাঁধের প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের। রাতে কাজ করতে কিছুটা অনীহা প্রকাশ করলেও ইউএনও’র তৎপরতায় তারা মাটি ফেলতে শুরু করলো। এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে রাতভর মাটি ফেলে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হলো। ইউএনও’কে রাতভর দাড়িয়ে থেকে বাঁধের কাজ শেষ করতে দেখে গ্রামবাসীও আপ্লুত। এভাবেই তিনি রক্ষা করলেন শরণখোলার সাউথখালীর গ্রামবাসীকে।
কথা হয় সাউথখালীর গাবতলা গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন হাওলাদারের সাথে তিনি জানান, উপজেলা সদর থেকে প্রত্যান্ত এই এলাকায় রাতেই ইউএনও এখানে আসবেন তা আমরা ভাবিনি। বাঁধ মেরামতে ওই দিনের ভূমিকায় গ্রামবাসী তার কাছে কৃতজ্ঞ। গ্রামের বাসিন্দা সফেজ খাঁন, সাইয়েদ হোসেন হাওলাদার, সোহাগ হাওলাদার বলেন, আমরা রাতভর ইউএনও’র সাথে ছিলাম। তার অদম্য সাহসীকতার কারনে গ্রামবাসী রক্ষা পেয়েছে। আমরা তার কথা চিরদিন মনে রাখবো।
সাউথখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হোসেন জানান, শরণখোলায় পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডারে চারশত কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মানাধিন বেড়িবাঁধ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতায় সাউথখালীর সাত কিলোমিটার বাঁধ এখনো ঝুকিপূর্ন। এ পর্যন্ত সাতবার বেড়িবাঁধ স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর ঘর–বাড়ি, গাছ–পালা ও জমি একদিকে নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে। অন্যদিকে বাঁধ নির্মানে জমি অধিগ্রহনের কারনে মানুষ ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। একমাত্র নদী শাসন ছাড়া এখন বাঁধ রক্ষা করা যাবে না। ওই রাতে ইউএনও’র ভূমিকা প্রসংশানীয় বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, দায়িত্ববোধের কারনে ওই রাতেই আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গেছি। গ্রামবাসির আন্তরিকতা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতার কারনে তাৎক্ষনিকভাবে বাঁধ মেরামত করা সম্বভ হয়েছে। তাছাড়া ওই সময় মেরামত করা না গেলে আরো ব্যাপকহারে বাঁধ ভেঙ্গে যেত এবং গ্রামবাসী প্লাবিত হতো।