প্রতিনিধি ৪ অক্টোবর ২০২০ , ৬:৩২:১২ প্রিন্ট সংস্করণ
জি এম বাবুল, শেরপুর : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের বনগাঁও বাজার থেকে জিগাতলা-আহমেদনগর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার জন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আশপাশের ৮টি গ্রামের অন্তত: ২০ হাজার মানুষ। বৃষ্টির মৌসুমে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে ওই দুর্ভোগ যেন আরও নতুন মাত্রা পায়। প্রতিবার ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস দিয়ে এলেও কাজের কাজ হয়নি কখনোই। বরং রাস্তার বেশিরভাগ স্থান পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চান এলাকাবাসী। জানা যায়, বনগাঁও বাজার থেকে জিগাতলা হয়ে আহমেদনগর রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অন্তত: ১০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। এই এলাকায় রয়েছে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, ৪টি মসজিদ ও দু’টি বাজার। পুরো রাস্তাটি কাঁচা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই এটি পরিণত হয় ভাগাড়ে। গাড়িতে তো দূরের কথা, মানুষের পক্ষে তখন হেঁটে চলাই দায় হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারে না। রাস্তার দুরবস্থার জন্য এখানকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও সার-বীজ পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কৃষিপণ্য সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় বিক্রি করতে হয় কমমূল্যে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয়রা জানান, এই এলাকায় একটি ডেইরি ফার্মসহ বেশ কয়েকটি মৎস্য খামার রয়েছে। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার জন্য ওইসব খামারের কাঁচামাল, খাবার ও ঔষধপত্র সরবরাহ সময়মতো নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। আর খামারে উৎপাদিত দুধ ও মাছ সময়মতো বাজারজাত করতে না পারায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এছাড়া গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থ বৃদ্ধ লোকদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয় এলাকাবাসীদের। দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দিয়ে জনসাধারণের কাছে ভোট নিয়ে এলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটেনি। স্থানীয় বাসিন্দা ও দুগ্ধ খামারের উদ্যোক্তা আবু শামা বলেন, তার খামারে ২৭টি বিদেশী গরু আছে। শুধুমাত্র এই বেহাল রাস্তার জন্য তার খামারের উৎপাদিত দুধ ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না। রাস্তাটি পাকাকরণ হলে এই এলাকায় আরও খামারসহ উদ্যোক্তা গড়ে উঠবে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোমিন জানান, এই এলাকায় রাস্তার দুরবস্থার জন্য বর্ষাকালে স্কুলে শিক্ষার্থীরা কম আসে। এতে তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। তাই সরকারের কাছে রাস্তাটি দ্রæত পাকা করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি জানান তিনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু এলাকাবাসীর ওই দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, এই রাস্তাটির বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রকৌশলী একেএম ফজলুল হক চাঁনকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, ওই রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশ খুব শিগগিরই পাকাকরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই এলাকায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ব্র্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন রাস্তা নির্মাণের জন্য দ্রত সময়ের মধ্যে টেন্ডার আহবান করা হবে।