প্রতিনিধি ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৮:১৫:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর মুগদা এলাকায় সাড়ে ৩ হাজার টাকার জন্য মমতাজ বেগম (৫০) নামে এক নারীকে আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে সোহানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সোহানকে (১৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে মা মমতাজ বেগমকে হত্যার অভিযোগে সোহানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন বাবা আব্দুল জালিল হাওলাদার (৫৫)।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মুগদার দক্ষিণ মাণ্ডা এলাকায় তাদের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ এসব তথ্য জানান।
ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সোহান জানিয়েছে, সম্প্রতি সে তার বন্ধু আরাফাতের মোটরসাইকেল চালিয়ে নষ্ট করে ফেলে। পরে সেই মোটরসাইকেল সুজনের গ্যারেজে নিয়ে ঠিক করায়। আজ সেখানে তার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। এজন্য মায়ের কাছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা চায় সে। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মায়ের সঙ্গে সোহানের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় সোহান তার মায়ের গলা চেপে ধরে। প্রাণে বাঁচতে মমতাজ বেগম তার ছেলের হাতে কামড় বসিয়ে দেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সোহান তার মাকে আঘাত করে। এ সময় ওই নারী মারা যান।
নিহত মমতাজের বড় ছেলে সোহাগ বলেন, আমরা ৩ ভাইয়ের মধ্যে দু’জন আলাদা থাকি। ছোট ভাই সোহান বাবা-মায়ের সঙ্গে ওই বাসাতেই থাকতো।
সোহাগ জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার সলোদী এলাকায়। বাবা আব্দুল জলিল সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ডিউটিতে চলে যান। আজ সকালে বাসায় এসে দেখেন মা (মমতাজ) রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ছোট ভাই সোহান বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে। পুলিশ জানিয়েছে, সোহান টাকার জন্য মাকে হত্যা করেছে। আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, সোহান এই কাজ করতে পারে।
বাসার মালিক আরমান আলী বলেন, আজ সকালে সোহান এসে বলে আমার মাকে কারা যেন মেরে ফেলেছে। এরপর আমি গিয়ে দেখি নিহত মমতাজ রক্তাক্ত অবস্থায় বাসার ফ্লোরে পড়ে আছে। তার মাথায় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন। তার গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ছিল। পরে পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার ছোট ছেলে সোহানকে আটক করে নিয়ে যায়।
ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে ওই নারীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় নিহত নারীর স্বামী জলিল বাদী হয়ে ছেলে সোহানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে। এ মামলায় সোহানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।