Uncategorized

সুনামগঞ্জে ফের পানি বৃদ্ধি, ঘরের কোণে বসে মানুষের হাহাকার

  প্রতিনিধি ১৩ জুলাই ২০২০ , ৭:২৯:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

সুনামগঞ্জে ফের পানি বৃদ্ধি, ঘরের কোণে বসে মানুষের হাহাকার

সাদ্দাম হোসেন, হাওরা ল :আবারও নতুন করে গত কয়েক দিনের অতি বৃষ্টিপাত আর উজানের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কারণে দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে উপজেলাগুলো বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ যেন আরও চরম আকার ধারণ করেছে। অতি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলের পানির প্রবল স্রোতের কবলে পরে ভাঙ্গনের কারণে জনগনের মূখে চলছে আবার বেড়ে গেল পানি, ঘরের কোণে বসে মানুষ হাহাকার করছে। সুনামগঞ্জ জেলা দ্বিতীয় দফায় ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক পরিমানে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে আসছে প্রবল স্রোতের ঢেও যা তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, ধর্মপাশা উপজেলার মানুষের বসত বাড়িতে আঘাত করছে যার ফলে মানুষ চরম দূর্ভোগে রয়েছে। ১০ দিন আগে বয়ে যাওয়া প্রথম দফায় বন্যার ক্ষতি এ উপজেলাগুলোর জন সাধারণ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এদিকে পাহাড়ি ১৮ টি ছড়া দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানির স্রোতে এলজিআরডি নির্মীত সীমান্ত সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারী বৃষ্টিসহ পাহাড়ি ১৮টি ছড়া ভারত থেকে ঢলের পানি নেমে আসা যাদুকাটা নদীর ও টাংঙ্গুয়া হাওরের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফলে সৃষ্ট দ্বিতীয় দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ জেলায় কয়েকটি উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। এতে করে সকল সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ তাহিরপুর,জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, ধর্মপাশাসহ বিভিন্ন উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে পানি নামার ফলে যাদুকাটা নদীর পানি বিপদসীমার ১২৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে রক্তি ও পাটলাই নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে যাদুকাটা নদীর পানির স্রোতের কবলে ভেঙ্গে যাওয়ার হুমকির মধ্যে রয়েছে নদীর তীরবর্তী পশ্চিম পাড়ের বেড়িবাঁধের গরকাটি, ঘাগড়া, কুনাট-ছড়া ও সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, ফাজিলপুর, নোয়াহাট, আনোয়ারপুর। অপর দিকে নদীর পূর্ব পাড়ের শত্তিস, মিয়ারছড়, মোদেরগাও, কালিকাপুর, বিনবাকুলি ও ডালারপাড়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের বেড়িবাঁধ। ইতিমধ্যে যাদুকাটা নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে বিন্নাকিলী বাজারসহ অনেক জায়গায় দোকান ঘর, বসত বাড়ি ও ফাজিলপুর জামে মসজিদ ভেঙে গিয়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

মধ্যনগর থানার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ডাঃ বাদল মিয়া বলেন, টাংগুয়ার হাওরের পানির স্রোতের কবলে বেসে আসে প্রচুর পরিমাণে ঢেও। আষাঢ় মাসে মুষলধারে বৃষ্টি ও মেঘালয় থেকে ঢল নেমে আসায় টাংগুয়ার হাওরের পানি বিপদ সীমার উপরে গিয়ে বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। অনাকাঙ্খিত বন্যার ফলে টাংগুয়ার পারের বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের গ্রামগুলি আন্তর পুর, রাজেন্দ্রপুর, নবাবপুর রুপনগর, ভোলাগঞ্জ, ইছামারী, মঝেরছড়া, বাঙ্গালভিটা, বাকাতলা, গোলাপপুর ও কার্তিকপুর, এইসব গ্রামগুলি ঢেউয়ের কবলে পড়ে বসতবাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে এমনকি বসত ঘরের কানায় কানায় পানি এবং রান্না ঘরের চুলায় পানি ওপরদিকে গুরু ছাগল নিয়ে লোকজন বিপাকে পড়েছে কেউবা উঁচু ও নিরাপদ জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নিতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্যায় কবলিত অসহায় মানুষের পাশে নেতৃত্বস্থানীয় লোকদের সাহায্য ও সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ। ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, উপজেলায় ফের বন্যার কারণে দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে বন্যার্তদের মধ্যে শুকনা খাবার ও জিআরের চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা যাবে।

আরও খবর

Sponsered content