প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২৩ , ১:৫৮:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক :
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল।
রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট বারের এই ঘটনা শুধুমাত্র আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক। এতে অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক অবিলম্বে একটি নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জোর দাবি জানাচ্ছি। আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক পুলিশী হামলার নির্দেশদাতা আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত সম্পাদক পদপ্রার্থী মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপি’র আইন সম্পাদক কায়সার কামাল, সমিতির সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের ট্রেজারার মো: কামাল হোসেন, সহ-সম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, মো: মাহবুবুর রহমান খান, আইনজীবী মোঃ আক্তারুজ্জামান প্রমূখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নির্বাচনকে ঘিরে আইনজীবীদের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক আগ্রহ ছিল। কিন্তু আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ্য করেছি যে, দেশের অন্য সকল নির্বাচনের মতো দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক চরিত্র তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে।
বক্তব্যে আরো বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কতিপয় অতি উৎসাহী আইনজীবী ও পুলিশের নারকীয় তাণ্ডব আইনজীবী হিসেবে সমাজের কাছে আমাদের হেয় করেছে। এটা শুধুমাত্র আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক ।
চলমান ঘটনা নিয়ে তারা প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছেন উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সভাপতি ও সম্পাদক পদপ্রার্থী একাধিকবার প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সাথে সাক্ষাৎ করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া পুলিশের তাণ্ডবে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের আহত হওয়ার বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করা হয়েছে।
‘এরপরেও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি তাণ্ডবের কোনো দৃশ্যমান প্রতিকার হয়নি। আমাদের দুঃখ, আইনজীবীদের একটি সমিতির নির্বাচনেও পুলিশকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়! এটা বড় লজ্জার বিষয়।’
নতুন নির্বাচন দাবি করে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের দাবি, ‘অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক অবিলম্বে একটি নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জোর দাবি জানাচ্ছি। আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক পুলিশী হামলার নির্দেশদাতা আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।’
এর আগে দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে ১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা।