প্রতিনিধি ২৬ অক্টোবর ২০২০ , ১:৫৭:০০ প্রিন্ট সংস্করণ
জুলফিকার ফুয়াদ:
ভোলার দৌলতখানে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার সোহাগ (৩০) স্মৃতিশক্তি হারিয়ে বাকপ্রতিবন্ধী হয়ে শিকলবন্দি জীবন যাপন করছে। বিচারের প্রত্যাশায় তার পরিবার দেড় মাস দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের কলাকোপা ৩ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। সোহাগ চরখলিফা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের রিয়াজ উদ্দিন বেপারি বাড়ির বাবুলের (৫০) ছেলে।
সোহাগের শ্বশুরী আমেনা জানায় , ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্বে আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউসের জামাই সোহাগ আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। ঘটনার দিন পার্শবর্তী বাড়ির নাসির গংদের সাথে জমির আইল কাটা নিয়ে আমার স্বামী নুরনবীর কথা কাটাকটি হয়। এক পর্যায়ে নাসির গংরা ধাওয়া করলে আমার স্বামী দৌড়ে বাড়িতে চলে আসে।
পথিমধ্যে তারা আমার মেয়ে জামাই সোহাগকে দেখতে পেয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং কোদালের বাট দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে। এতে করে সোহাগ ঘটনাস্থলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর আমার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস ও খাদিজা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মারধোর করে।
আমরা সোহাগকে দৌলতখান হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর দৌলতখান থেকে ভোলা, ১২ সেপ্টেম্বর ভোলা থেকে বরিশাল, ২২ সেপ্টেম্বর বরিশাল থেকে ঢাকা নিয়ে চিকিৎসা চালাই।
সোহাগের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস জানায়, আমার স্বামী ঢাকাতে চাকরি করতো। তার স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়ার পর আমার পরিবারের রুটি-রোজগার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে আমি ২ সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অসহায় হয়ে পরেছি । ধারদেনা ও জমি বিক্রি করে ১ মাসেই স্বামীর পিছনে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছি।
অর্থের অভাবে স্বামীকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে এসে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। একদিকে স্বামীর চিকিৎসার টাকা অন্যদিকে সংসার পরিচালনার খরচ সব মিলিয়ে আমি এখন দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি ।
অপরদিকে প্রতিপক্ষ নাসিরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। নাসিরের স্ত্রী জানায়, ঘটনার দিন আমরা জমিতে কাজ করতে গেলে সোহাগ ও তার শ্বশুর এসে আমাদেরকে বাঁধা দেয়। এমনকি এক পর্যায়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমার স্বামী নাছির ও ছেলে মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা তাদেরকে মারধর করি নি।
দৌলতখান থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমান জানান, এ ব্যাপারে দু পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তদন্ত চলছে।