প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২০ , ১২:৪১:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মঞ্জুর হোসেন মিলন, গাজীপুরঃ শরীর সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়াম, সুস্থ থাকার জন্য দরকার খাবার আর মনকে সুস্থ রাখার জন্য চাই বই। করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে ঘরবন্দি থাকাবস্থায় বইকে ভালো বন্ধু করতে পারি। একটি ভালো বই জীবন বদলে দিতে পারে। গাজীপুর সদর উপজেলার সুকুন্দি গ্রামে তরুণদের বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে আলোর বার্তা পাঠাগার স্থাপনকারী বই প্রেমিক এ্যাড. মো: জালাল উদ্দিন একান্ত স্বাক্ষাৎকারে দুর্যোগে ঘরবন্দি মানুষদের প্রতি ‘স্মার্ট ফোনে আসক্তি নয়, বই পড়ার আহŸান জানান।
নিজে স্বপ্ন দেখতে ও অন্যকে দেখাতে, সত্যকে জানতে ও জানাতে এবং ভাবতে ও ভাবাতে ভালোবাসেন ইতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গির মানুষ এ্যাড. মো: জালাল উদ্দিন। এলাকার যুব সমাজকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত রাখতে নির্ভীক এই মানুষটি গড়ে তুলেছেন আলোর বার্তা নামে একটি পাঠাগার। করোনাভাইরাস ঝুঁকিমুক্ত থাকার সতর্কতায় পাঠকরা এখন আর পাঠাগারে আসেন না। ১৬এপ্রিল বৃহস্পতিবার বই প্রেমি জালাল উদ্দিন একাই বসা ছিলেন পাঠাগারে। সামাজিক ও শারেরীক দূরত্ব রেখেই পাঠাগরে এ প্রতিবেদকের কথা হয় তাঁর(এ্যাড. মো: জালাল উদ্দিন) সাথে।
ভোরের দর্পণনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, একটি জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে, ‘‘পড়িলে বই আলোকিত হই-না পড়িলে বই অন্ধকারে রই” এই শ্লোগান কে সামনে নিয়ে নিভৃত পল্লীর মানুষের মধ্যে অন্ধকার দূর করে আলোর বার্তা পৌঁছে দিতে গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়ীয়া ইউনিয়নের সুকুন্দি গ্রামে বিগত ০১নভেম্বর-২০১৭ ইং প্রতিষ্ঠা করা হয় আলোর বার্তা পাঠাগার। লাইব্রেরীটির সরকারী নিবন্ধন নং গাজীপুর সদর-১২।
পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ জালাল উদ্দীন ভান্ডারী জানান, বর্তমানে সমাজের সর্বত্র মাদকের যে ছড়াছড়ি, শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্মার্ট ফোনের যে আসক্তি তা থেকে তাদের বিরত রেখে, রুচিশীল সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড জোরদার করতে এবং পাঠাভ্যাস গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠার পর হইতে পাঠাগারটি কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের এই মহাদূর্যোগে, লকডাউন, কোয়ারান্টাইন এর এই অবসর সময়ে সবাইকে তিনি পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে আহবান জানান এবং পাঠাগারটির সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা থেকে পছন্দ মতো যে কোন বই বাড়ীতে নিয়ে পড়ার জন্যও বিশেষ আমন্ত্রণ জানান। বর্তমানে এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষকে সচেতন করতে, কোয়ারান্টাইন, লকডাউন মেনে চলতে, সুকুমার বৃত্তি গঠন করতে ও পাঠাগার আন্দোলন সফল করার জন্য এবং বাংগালী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড জোরদারে লাইব্রেরীগুলোতে প্রণোদনা প্রদান করতে তিনি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
পারস্য কবি ওমর খৈয়াম এর বিখ্যাত উক্তি, ‘রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে, কিন্তু একখানা বই অনন্ত যৌবনা, যদি তেমন বই হয়।’ আবার ম্যাক্সিম গোর্কি বলেছেন, ‘আমার মধ্যে উত্তম বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তার জন্য আমি বইয়ের কাছে ঋণী।’ বই হলো মনের খোরাক। একটা ভালো বই জীবন বদলে দিতে পারে। এমন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশায় ভোরের দর্পণ পত্রিকার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।