প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২০ , ১১:৪৫:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ
হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে ব্রিটেনে গিয়ে বসবাস করা এবং ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
চীনের পাশ করা নতুন হংকং ন্যাশনাল সিকিউরিটি ল বা জাতীয় নিরাপত্তা আইন ঘোষণার পর এমন সিদ্ধান্ত নিলো ব্রিটেন প্রশাসন।
মঙ্গলবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিরাপত্তা আইন সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে একে আইনে পরিণত করেন। এর প্রতিবাদে প্রবল বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠে হংকং।
ব্রিটেন মনে করছে, নতুন এই আইনে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন লঙ্ঘন হস্তক্ষেপ করা হবে। তাই পূর্বের এই ব্রিটিশ উপনিবেশ ছেড়ে সেখানকার বাসিন্দাদের ব্রিটেনে গিয়ে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ করে দিতেই এই প্রস্তাব দিয়েছেন বরিস জনসন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানান, সাড়ে তিন লাখ ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী এবং আরও ২৬ লাখ যোগ্য আবেদনকারীকে আগামী পাঁচ বছর ব্রিটেনে গিয়ে বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে। তার এক বছর পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রিটেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
হংকংয়ে বসবাসকারী যাদের কাছে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ওভারসিজ পাসপোর্ট রয়েছে, আশির দশকে তাদের বিশেষ কিছু সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। যদিও বর্তমানে তা কাটছাঁট করা হয়েছে। তবে এই পাসপোর্ট যাদের রয়েছে, তারা এখনও ভিসা ছাড়াই ৬ মাসের জন্য ব্রিটেনে অবস্থান করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, নতুন নিয়মে অনাবাসী ব্রিটিশ নাগরিক এবং তাদের উপরে নির্ভরশীলরা পাঁচ বছরের জন্য ব্রিটেনে গিয়ে বসবাসের পাশাপাশি কর্মসংস্থান এবং পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। পাঁচ বছর অতিক্রম হওয়ার পর তারা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার একবছর পরই নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, হংকংয়ের স্থানীয় প্রশাসন মঙ্গলবার যে নতুন আইন পাশ করার কথা জানিয়েছে, তা ১৯৮৫ সালে ব্রিটেন এবং চীনের মধ্যে হওয়া যৌথ ঘোষণার পরিপন্থী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্রিটেনের কনসারভেটিভ দলের নেতা জানান, নতুন এই আইন স্পষ্টতই দুই দেশের আইনি চুক্তির খেলাপ করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে হংকংয়ের হস্তান্তর হওয়ার পর ৫০ বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রে হংকং এবং সেখানকার বাসিন্দাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না চীন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মতে, যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে হংকংকে দেয়া স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে এই নতুন আইন।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, হংকংয়ের রাজনৈতিক অধিকার চূর্ণ তথা স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার অংশ হিসেবেই এ আইন প্রবর্তন করেছে চীন।