হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৩:২২:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি অক্সিজেন মহাসড়কের বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে হাটহাজারী বাস-স্টেশনের জিরোপয়েন্ট এলাকা। প্রতিদিনই হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তাদের। পার্বত্য অঞ্চলের খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটিসহ রাউজান ফটিকছড়ি উপজেলার প্রায় ৩০টি সড়কের হাজারের কাছাকাছি যানবাহন যাতায়াত করে হাটহাজারী সদরের বাস-স্টেশন জিরো পয়েন্ট দিয়ে। সড়কের দুইপাশে ফুটপাত অবৈধভাবে হকারদের দখলে থাকায় সড়ক সংকুচিত হতে হতে আর ছোট হওয়ার জায়গা নেই। সেই সাথে সড়কে জিপ, কার, মাইক্রো, সিএনজি অটোরিকশা যত্রতত্র পার্কিং করে রাখায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের চরম বেগ পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত।
এ সড়কে প্রতিদিন হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচলে সড়কের জিরো পয়েন্ট মোড়ে রাস্তা সরু হওয়াসহ ১শ গজের মধ্যে দুটি সিএনজি গ্যাস পাম্পের দীর্ঘ লাইনও যানজটের অন্যতম কারণ। তাছাড়া ওই এলাকার সিদ্দিক মার্কেট, আলিফ হসপিটাল, আল হাশেমী হোটেলসহ কয়েকটি স্থানে অবৈধ পার্কিংয়ের কারণেই এ তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি। পার্শ^বর্তী উপজেলায় গ্যাস ফিলিং স্টেশন না থাকায় হাটহাজারীর পাম্প থেকে গ্যাস নিতে হচ্ছে পরিবহনগুলোকে। গ্যাস পাম্পের দীর্ঘ লাইনের কারণেও যানজট দীর্ঘতর হচ্ছে বলে পুরো উত্তর চট্টগ্রামবাসীর দাবি। উপজেলা প্রশাসনসহ ট্রাফিক পুলিশের বিভিন্ন অভিযানেও সুরাহা মিলছে না জিরো পয়েন্ট, ত্রিবেণী মোড়,কলেজ মোড়ের যানজটে।
সরজমিনে গিয়ে ট্রাফিক বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তব্যরত পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাটহাজারী ট্রাফিক বিভাগে রয়েছে কনেস্টেবল ৭জন, এটি এস আই ২জন, সার্জেন্ট ২জন, টি আই ১জন। এদের মধ্যে বড়দিঘীর পাড় এলাকায় ২জন, ত্রিবেনী মোড়ে ২জনসহ বাসস্টেশন জিরো পয়েন্টে ৬জন প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করেন। পার্বত্য অঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলার সিএনজি পিকআপ গাড়িগুলো গ্যাস নিতে বাস স্টেশন এলাকায় দুটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে আসে। গ্যাস নেয়ার যে নির্ধারিত সময় রয়েছে তখনই বিভিন্ন এলাকার যানবাহনগুলো প্রবেশ করলে যানজটের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া চট্টগ্রাম নগর থেকে বাস স্টেশন আসা-যাওয়া বাসগুলো যত্রতত্রভাবে ইউটার্ন করার সময়ও তীব্র যানজটের চিত্র দেখা যায়।
এদিকে একাধিক পথচারীরা জানান, শুধু যানবাহনের কারণেই যানজট সৃষ্টি হয় না, অবৈধভাবে ফুটপাত হকারদের দখলে রাখা, বিভিন্ন মার্কেটের সামনে পার্কিং করা, ট্রাফিক পুলিশের জনবল কম হওয়াসহ রাঙ্গামাটি নাজিরহাট সড়কের জিরো পয়েন্ট এলাকা ছোট হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টির মূল কারণ। এখানে শুধু ট্রাফিক পুলিশকে দোষ দিলেই হবে না, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সড়ক প্রশস্তকরণে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা সড়কের মূল স্পটে বন্ধ করতে হবে। তাহলে যানজট মুক্ত নগরী হিসেবে হাটহাজারী পরিচিতি লাভ করবে।দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে হাজার হাজার মানুষ।
হাটহাজারী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে গজিয়ে উঠা কয়েকটি ফিলিং স্টেশন ও গ্যাস পাম্পের গাড়ি অবৈধ পার্কিংয়ে রাস্তা দখল করে যানজট বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে আটকে থাকায় গন্তব্যে পৌঁছতে অনির্দিষ্ট সময় লেগে যায়। চট্টগ্রামনগরী থেকে হাটহাজারীতে প্রবেশদ্বার নতুনপাড়া সিএনজি স্টেশন, আমানবাজার, লালিয়ারহাট, বড়দিঘীরপাড়, চৌধুরীহাট, মদনহাট ও কাটিরহাটে সড়ক দখল করে বাজার বসায় দীর্ঘমেয়াদী যানজট সৃষ্টি হয়। হাটহাজারী বাজার, বাস¯ট্যান্ড ও কলেজ গেইট এলাকায় দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে বাজার ও ফুটপাত দখলের কারণে।
হাটহাজারী ট্রাফিক ইনস্পেক্টর(টি আই) বখতিয়ার উদ্দিন শামীম বলেন, হাটহাজারী উপজেলার উপর দিয়ে খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি জেলার যানবাহনগুলো নগরে যেতে হয়। শত শত গাড়ি একত্রিত হয়ে দুটি সড়ক দিয়ে যাতায়াতের প্রবেশ মুখ হাটহাজারী জিরো পয়েন্ট এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। অবৈধ গাড়ী চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন নো পার্কিংসহ নানা অভিযোগে মামলা দেয়া হচ্ছে। যানজটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। অনৈতিক কোন কর্মকান্ডে ট্রাফিক পুলিশের কেউ জড়িত নয়। শতভাগ চেষ্টা করি হাটহাজারী সদর এলাকাকে যানজট মুক্ত রাখতে।