আন্তর্জাতিক

হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে আফগানদের বিক্ষোভ

  প্রতিনিধি ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:১৬:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

তালেবানের ‘ঘরে থাকার নির্দেশ’ উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবারও আফগানিস্তানের বিভিন্ন অংশে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন অসংখ্য মানুষ। কাবুলে পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়েছেন কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়েছে বন্দুকধারী তালেবানরা। বিক্ষোভ হয়েছে পারওয়ান এবং নিমরোজ প্রদেশেও।

বুধবারের বিক্ষোভ নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে রাজধানী কাবুল থেকে আটক হওয়ার পর তালেবানের ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। প্রকাশিত ছবিতে তাদের ক্ষতবিক্ষত শরীরে বেধড়ক মারধরের চিহ্ন দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে সেসব ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর তালেবানের বর্বতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার ফটো সাংবাদিক নেমাতুল্লাহ নাকদি কথা বলেছেন বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ‘তালেবানদের একজন তার পা আমার মাথার উপর রেখে আমার মুখ কংক্রিটের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। তারা আমার মাথায় লাথি মারে। আমার তখন মনে হচ্ছিল, তারা আমাকে মেরে ফেলতে যাচ্ছে।’ তার এক সহকর্মীও তালেবানের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

Taliban
তালেবানের হাতে নির্যাতনের শিকার দুই আফগান সাংবাদিক।

নেমাতুল্লাহ নাকদি একটি পুলিশ স্টেশনের সামনে অধিকারের দাবিতে সোচ্চার আফগান নারীদের বিক্ষোভের রিপোর্ট করছিলেন। তিনি স্থানীয় দৈনিক ইতিলাতের ফটোগ্রাফার। ওই সময় নাকদির সঙ্গে তার সহকর্মী তাকি দারিয়াবিও ছিল। বুধবারের বিভিন্ন অংশে বিক্ষোভের পর তালেবান আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতিবিহীন সব ধরনের বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

তারপরও বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ হচ্ছে আফগানিস্তানে। পাকিস্তান দূতাবাসের সামনে ‘আমরা মুক্তি চাই’ স্লোগান দেওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। পারওয়ান প্রদেশের বিক্ষোভেও গুলি ছুড়েছে তালেবান। সেখানে বিক্ষোভকারীরা ‘অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না’ এবং ‘পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের পতন হোক’ বলে চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছিলেন।

পুরুষ-সর্বস্ব তালেবান সরকার গঠনের প্রতিবাদে গত বুধবার রাজধানী কাবুল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাদাখশানে বিক্ষোভ করেন আফগান নারীরা। বিক্ষোভকারী কিছু নারী সরকারের মন্ত্রিসভায় নারী মন্ত্রী অন্তর্ভূক্ত করার দাবি তোলেন। তবে ওইদিনের বিক্ষোভগুলোও ছত্রভঙ্গ করে দেয় তালেবান। অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভরত ওই নারীরা বেধড়ক মারধরেরও শিকার হয়েছেন।

গত মঙ্গলবার তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণার দিন আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরে হেরাতের বিক্ষোভে তিনজন নিহত হয়েছেন। তালেবান অবশ্য ওইদিনের বিক্ষোভে সহিংসতার দায় অস্বীকার করেছে। এদিকে প্রতিনিয়ত বিক্ষোভ জোরালো হওয়ার মধ্যে রাজধানী কাবুলের বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

আফগানিস্তানের সাংবাদিক বিলাল সওয়ারি টুইট করে জানিয়েছেন, দেশটির টেলিকমিউনিকেশন খাতের সঙ্গে জড়িত একাধিক সূত্র তাকে নিশ্চিত করেছে, বেশ কয়েকটি জেলায় সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখতে তাদের নির্দেশ দিয়েছে তালেবান।

আরও খবর

Sponsered content