প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২০ , ৪:০২:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মা ইলিশ রক্ষায় ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে ইলিশ নিধন না করতে গত ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন সব ধরনের জাল ফেলা, মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার।
ঝালকাঠি জেলায় নিবন্ধিত জেলে ৫২৬৫ জনে ইলিশ আহরণকারী জেলে রয়েছেন ৪হাজার ৬৩জন। এর মধ্যে ইলিশ নিধন নিষেধাজ্ঞা সময়ে সাড়ে ৩হাজার জেলেকে ভিজিডি সহায়তা দেয়া হয়েছে। অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করে ২২দিন শেষে নদীতে জাল ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সকল ধরনের জেলেরা।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মা ইলিড্ডড্ডড্ডশ রক্ষায় ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘের সুগন্ধা নদী ঝালকাঠি অংশে য়১৬ কিলোমিটার ও ১০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বিষখালীর নদীর ঝালকাঠি অংশে ২৯কিলোমিটার নৌ-সীমাকে সরকার ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘঘোষণা করেছে। এ অভয়াশ্রম এলাকায় গত ১৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে, ৪ নভেম্বর পর্যন্ত২২দিন সব ধরনের মাছ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। অভয়াশ্রম এলাকার জেলেরা যাতে নদীতে না নামে এ জন্য সরকার প্রতি বছর এ সময়ে ৪০কেজি করে খাদ্যশস্য (চাল) ভিজিএফ সহায়তা হিসেবে বরাদ্দ দেয়।
দীর্ঘ ২২দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (৪,নভেম্বর) দিনশেষে রাত ১২ টার পর থেকে সকল প্রকার মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা।
বৃহস্পতিবার (০৫,নভেম্বর) থেকে বাজারে মিলবে সুস্বাদু রূপালী ইলিশ। মাছ কেনা-বেচার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মৎস্যঘাটগুলোর আড়তদাররাও।
দীর্ঘ ২২দিন অলস সময় কাটানোর পর নদীতে মাছ ধরতে নামবে জেলেরা। এ কারণে স্বস্থি ফিরে আসছে জেলে পরিবারগুলোতে!
ঝালকাঠি জেলে পল্লী এলাকায় গিয়ে জেলেদের মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। সরেজমিনে জেলেদের কাউকে নৌকা মেরামত করতে ও কাউকে জাল ঠিক করার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। ৪ নভেম্বর রাত ১২টা বাজলেই নদীতে মাছ শিকারে বের হবেন এমন খবরে তাদের অনেকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে।
জেলে অধির মালো জানান, টানা ২২দিন সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা নদীতে যাইনি। এখন অভিযান শেষ হচ্ছে। তাই জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা জানান, ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘের সুগন্ধা নদীর ঝালকাঠি অংশে ১৬ কিলোমিটার ও ১০৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বিষখালীর নদীর ঝালকাঠি অংশে ২৯কিলোমিটার নৌ-সীমাকে মা ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছিল জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাব ও কোস্ট গার্ড নিয়ে মা ইলিশ রক্ষায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডিম ছাড়ার সময়ের সাগরের লবণ পানির মাছ মিষ্টি পানিতে উঠে আসে। এজন্য আমাদের উপূকলীয় জেলা ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে মা ইলিশের প্রচুর দেখা মেলে। জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে মা ইলিশ। একারণে নিবন্ধিত জেলেদের বাইরেও মৌসুমী জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামে। কিছু অসাধু জেলেরা অভয়াশ্রমে মাছ শিকার করলেও আমরা তাদের জেল জরিমানা করেছি। এবার অভিযান আমরা অনেক ভালোভাবে করেছি। এবার আরো বেশি ইলিশ উৎপাদন হবে বলে আশা করেন এ কর্মকর্তা ।