প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১২:২১:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। মূলত ডুবোচর আর নাব্যতা সংকটে বার বার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এ নৌরুটে ফেরি চলাচল। সংকটের নিরসনে সাড়ে ৩ মাসে পদ্মায় ডেজিং করতে গিয়ে ৩ কোটি টাকার তেল পুড়িয়েও সচল রাখা গেলো না ফেরি চলাচল। এতে করে দুই পাড়ের হাজার হাজার যাত্রী অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বাধ্য হয়েই তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোট, লঞ্চ ও ট্রলার দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্য যাচ্ছেন।
এদিকে শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে নাব্যতা সংকট নিরসনে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে তোলা পলিমাটি আশেপাশে ফেলায় কোনো উপকারই হচ্ছে না বলে মনে করছেন এ রুটে চলাচলকারী লোকজন। বরং আরও চর জেগে চ্যানেলগুলো বাধাগ্রস্ত হয়ে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
জানা যায়, গেল এক মাস ধরে বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার মেশিনগুলো পলি কেটে তা ফেলা হয়েছে পদ্মার চরের খুবই কাছে ও চ্যানেলের আশেপাশেই। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, উল্টো কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারও পলি জমে নাব্যতা সংকট ও ডুবোচর দেখা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, গত সাড়ে ৩ মাস পর্যবেক্ষণের পর বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং কার্যক্রম নিয়ে এমন অভিযোগ তুলেছেন শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে চলাচলরত ফেরির একাধিক চালক ও বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা।
তাদের মতে, চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না সিনোহাইড্রোর ড্রেজার দিয়ে ড্রেজিং প্রক্রিয়া সঠিক। চীনা প্রতিষ্ঠানটি ড্রেজিংয়ে কাটা পলিমাটি পদ্মা চরের মাঝখানে ফেলার কারণে সেগুলো নদীর পানিতে মেশার সুযোগ পায় না। অথচ বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজারগুলো ড্রেজিং করে পলিমাটি ফেলার কাজও সম্পূর্ণ উল্টোটা করছে। তারা যেখানে ড্রেজিং করেছে তার পাশেই পলিমাটি ফেলেছে, যা স্থানীয়দের কাছেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজে অধিগ্রহণ করা জায়গায় চীনা প্রতিষ্ঠান ড্রেজিংয়ের পলিমাটি ফেলছে। সেখানে তাদের পলিমাটি ফেলতে দেওয়া হয় না। আর মাটি ফেলতে বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব উঁচু কোনো জায়গাও নেই। নৌযান চলাচলের বৃহত্তর স্বার্থে প্রতিবছরই চরের পাশেই পলি ফেলতে হচ্ছে।
শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে নাব্যতা সংকট নিরসনে গত জুন থেকে আগস্ট পযর্ন্ত ৩ মাসে ৫ লাখ ৬০ হাজার ঘনমিটার পলি অপসারণ করেছে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্তৃপক্ষ। এতে খরচ হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। কিন্তু সরকারের বিপুল পরিমাণে টাকা খরচ হলেও কোনো উপকারই হয়নি। স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা পলিমাটি বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে আবারও নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ড্রেজিং কাজ অব্যাহত ছিল। মাঝ পদ্মায় লৌহজংয়ে চর ভেঙে চ্যানেলের মুখে পড়ে, এ চ্যানেলটি আপাতত ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তাই লৌহজং টার্নিং চ্যানেলে এখন আর ডেজিং করা হচ্ছে না।
পদ্মায় লৌহজং টার্নিং চ্যানেলের ড্রেজিং কাজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পর্যন্তও বন্ধ রয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানিয়েছেন।