চট্টগ্রাম

৫০ বছর ধরে কাঁদছেন ল²ীপুরের-মেঘনার স্বজনহারা উপক‚লবাসী

  প্রতিনিধি ১২ নভেম্বর ২০২০ , ৬:১৩:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

জাহাঙ্গীর লিটন, ল²ীপুর: ১২ নভেম্বর বাংলাদেশের উপক‚লবাসীর স্বজন হারানোর দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে এক মহাপ্রলয়ংকরি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে লন্ড-ভন্ড হয়ে যায় বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা। ওই প্রাকৃতির দুর্যোগের ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও ল²ীপুরের রায়পুর, সদর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার মেঘনা উপক‚লবাসী এখনো অরক্ষিত। ভয়াল ১২ নভেম্বর উপক‚লবাসীর বেদনার দিবস হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মহামারী করোনা সংকট। প্রতি বছর এ দিনটি পালন উপলক্ষে ল²ীপুর সদর ও কমলনগর ও রায়পুরে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। স্বজনহারা মানুষগুলো বাড়িতে ফাতিহা আর দোয়া ছাড়া কিছু করতে পারছে না। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে ল²ীপুর, নোয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম জেলার একাংশসহ পুরো উপক‚লীয় অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় ঝড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে। সেই স্মৃতি নিয়ে আজো যারা বেচেঁ আছেন অথবা স্বজন হারিয়েছেন, বিভীষিকাময় এ দিনটির কথা মনে করেই আতঙ্কে শিউরিত হন। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ২০১৭ সালের ১৮ মে এক ঘোষণায় ১৯৭০ সালের ঝড়টিকে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতি ঝড় হিসেবে ঘোষণা দেয়। তখন ধারণা করা হয়েছিল, প্রলয়ঙ্করী এই দুর্যোগে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। কিন্তু তৎকালীন বিভিন্ন বিশ্বমিডিয়া থেকে তিন থেকে পাঁচ লাখ লোক নিহত হওয়ার খবর প্রচারিত হয়েছিল। ল²ীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। স্রোতে ভেসে যায় নারী শিশু ও বৃদ্ধসহ অসংখ্য মানুষ। সে রাতে এ জেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ¡াসে রামগতির মেঘনা উপক‚লীয় চরআবদুল্লাহ এবং কমলনগরের ভুলুয়ানদী উপক‚লীয় চরকাদিরা সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় হানা দেয়। চারিদিকে লাশ আর লাশ, লাশের গন্ধে মানুষ কাছে মানুষ যেতে পারেনি। ৩-১০ ফুটের জলাবদ্ধতা কারণে মৃত মানুষগুলোকে মাটি দেয়া যায়নি। গত কয়েক বছরের মতো স্থানীয়ভাবে ৪র্থ উপক‚ল দিবস পালিত হচ্ছে। ল²ীপুরের কমলনগর প্রেসক্লাব, রামগতি বাজার এবং রায়পুরের চরবংশী এবং ল²ীপুর অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম ও সকাল থেকে এ দিবসটি পালন করেছেন। দিবস পালনকালে আলোচনা সভা, সেমিনার এবং দোয়া ও মোনাজাতসহ প্রার্থনা করা হয়েছে। রায়পুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, গত ৫০ বছর ধরে তার এলাকার বেশী অংশজুরে বেড়িবাঁধ খোলা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন গণমাধ্য কর্মীদের জানান, রায়পুরের অনেক অংশে বেড়ি বাঁধ খোলা। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ও রয়েছে। তবে কয়েকটি পয়েন্ট কাজ শুরু হবে। ১৯৭০ সালের এ দিনে সব চেয়ে বেশি প্রাণহানি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয় ল²ীপুরের সদর, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা। চরবংশী ইউপির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা জানান, এমন কোনো বাড়ি বা ঘর নেই, যেখান থেকে শত লোক মারা যায়নি। তাই দিনটি এলে প্রতিটি বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে যায়।

আরও খবর

Sponsered content