সম্পাদকীয়

এক অপরাজিত জেনারেল

  প্রতিনিধি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৫:৩৭:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

 

মো. খবির উদ্দিন:

ইতিহাসের এক দুর্দান্ত প্রতাপশালী জেনারেল, সর্বকালের অন্যতম সেরা বীরযোদ্ধা, ইস্কান্দার বা সেকান্দার বাদশাহখ্যাত আলেকজান্ডার মতান্তরে ২১ জুলাই ৩৫৬ খ্রিস্টপূর্ব মেসিডোনিয়া রাজ্যের পেল্লা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। আলেকজান্ডার ছিলেন মেসিডোনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ও তার চতুর্থ স্ত্রী অলিম্পিয়াসের পুত্র। অত্যন্ত সুপুরুষ ছিলেন আলেকজান্ডার। বলিষ্ঠ চেহারায় রূপ আর শক্তির মিশেলে তিনি অন্য সব রাজার থেকে ছিলেন স্বতন্ত্র। সিংহের মতোই বিক্রম ছিল তার। মাথায় সবসময় সিংহের চামড়া জড়িয়ে রাখতেন। মাত্র ৩৩ বছরের মধ্যেই সুদূর গ্রিস থেকে একের পর এক দেশ জয় করে চলে এসেছিলেন ভারত অবধি (অ্যাড্রিয়াটিক সাগর থেকে সিন্ধু নদ পর্যন্ত)। তিনি জয় করেছিলেন ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাম্রাজ্য। আলেকজান্ডারের মাতা অলিম্পিয়াস ছিলেন উচ্চাভিলাষী। আলেকজান্ডারের জীবনে মায়ের ভূমিকা ছিল অসামান্য। ছেলেবেলা থেকেই তিনি শিশু আলেকজান্ডারকে বুঝিয়েছিলেন পারস্য জয় করার জন্য তার জন্ম হয়েছে। ৩৩৬ খ্রিস্টপূর্র্ব আলেকজান্ডারের পিতা দ্বিতীয় ফিলিপের আততায়ীর হাতে আকস্মিক মৃত্যু হলে কুড়ি ছুঁইছুঁই তরুণ আলেকজান্ডার হয়ে পড়েন পিতার স্থলাভিষিক্ত। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজত্বের অধিকাংশ সময়ই তিনি যুদ্ধ ও রাজ্য জয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি এশিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকায় অসংখ্য সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন। তার বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্বের জন্য সেই সময়ে গ্রিকরা ইউরোপ থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারত পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়। তিনি ইতিহাসের অন্যতম সফল সেনানায়ক হিসেবে পরিগণিত হন। আলেকজান্ডার আর দশজন অভিজাত গ্রিক কিশোরের মতোই শিখেছিলেন দর্শন, শরীরচর্চা ও যুদ্ধবিদ্যা। প্রথম জীবনে তিনি ষোল বছর বয়স পর্যন্ত দার্শনিক এরিস্টটলের নিকট শিক্ষা লাভ করেন। “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত” পৌঁছানোর স্পৃহায় তিনি ৩২৬ খ্রিস্টপূর্র্ব ভারত অভিযান শুরু করেন, কিন্তু তার সেনাবাহিনী ভিন্নমত পোষণের কারণে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষ জয় না করে তিনি ফিরে যেতে বাধ্য হন।

অন্যান্য সকল মেসিডোনিয়া কিশোরদের মতোই আলেকজান্ডারকে পড়া, যুদ্ধ করা, শিকার করা প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হয়। অসম্ভব বিচক্ষণ এবং বীরযোদ্ধা রাজা ফিলিপ বালক আলেকজান্ডারের শিক্ষার কোন ত্রুটি রাখেননি। জগৎবিখ্যাত দার্শনিক এরিস্টটলকে নিযুক্ত করেছিলেন আলেকজান্ডারের শিক্ষক হিসেবে। মিয়েজার মন্দিরকে শ্রেণিকক্ষ হিসেবে প্রদান করেন। আলেকজান্ডারকে শিক্ষা প্রদান করায় দ্বিতীয় ফিলিপ এরিস্টটলের শহর স্তাগেইরা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করেন এবং এরিস্টটলের শহরের প্রাক্তন অধিবাসী যারা দাস হিসেবে জীবন যাপন করছিলেন তাদের ক্রয় করে মুক্ত করেন এবং নির্বাসিতদের শাস্তি মওকুফ করেন। যারা মিয়েজার প্রতিষ্ঠানে আলেকজান্ডারের সাথে মেসিডোনিয়ার সম্ভ্রান্ত পরিবারের কিশোরেরা শিক্ষালাভ করেন, তাদের অধিকাংশই পরবর্তীকালে আলেকজান্ডারের বন্ধু এবং সমর অভিযানের সেনাপতি হিসেবে পরিগণিত হন। এরিস্টটল তাদের চিকিৎসাবিদ্যা, দর্শন, নীতি, ধর্ম, তর্কবিদ্যা ও কলা সম্বন্ধে শিক্ষা প্রদান করেন। তার শিক্ষায় আলেকজান্ডারের হোমারের ইলিয়াড মহাকাব্যের প্রতি প্রগাঢ় প্রেমের উন্মেষ ঘটে, যা তিনি তার ভবিষ্যতের সকল অভিযানে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। প্রায় তিন বছর এরিস্টটলের কাছে তাঁর পাঠ গ্রহণ সম্পূর্ণ হয়। এরপর আলেকজান্ডার যোগ দেন পিতার সামরিক বাহিনীতে। অসম্ভব সাহসিকতার সাথে লড়েন প্রতিটি যুদ্ধে।

অল্প বয়স হলেও সিংহাসন সামলানো তার পক্ষে কঠিন হয়নি। কারণ লিওনিদাসের মতো একজন প্রশিক্ষকের কাছ থেকে তিনি শরীর বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করেছিলেন আর মাত্র তেরো বছর বয়সে শিক্ষা লাভ করেছিলেন গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের কাছ থেকে। মূলতঃ এই সুশিক্ষার কারণেই আলেকজান্ডার প্রচণ্ড শারীরিক দৃঢ়তা ও মেধার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। ছেলেবেলায় আলেকজান্ডারের বাবা ফিলিপ বলেছিলেন, ‘মেসিডন বড়ই ছোট রাষ্ট্র তোমার পক্ষে। একদিন সারা পৃথিবী জয় করবে তুমি।’ বাবার সেই কথাটা সত্যিই প্রমাণ করেছিলেন আলেকজান্ডার। তাই গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটলের ছাত্র আলেকজান্ডারকে বলা হয় ‘অর্ধেক পৃথিবীর রাজা’। কারণ গ্রিসের ছোট রাজা মেসিডন ছাপিয়ে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী জয় করেছিলেন।

আলেকজান্ডারের উত্থানের ঊষালগ্নে গ্রিস কোন সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল না। বিভক্ত ছিল অনেকগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে। পারস্য সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য প্রায় সকলেই জোটবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত বাহিনী গঠন করেছিল। আলেকজান্ডারের পিতা ছিলেন সেই সম্মিলিত বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার। কিন্তু পারস্য অভিযানের আগেই ফিলিপ আততায়ীর হাতে নিহত হলেন। আলেকজান্ডারের বয়স তখন কুড়ি ছুঁইছুঁই। পিতার স্থলাভিষিক্ত হতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আলেকজান্ডার সফল হলেন। ৩৩৬ খ্রিস্টপূর্র্ব মেসিডোনিয়ার মসনদে বসলেন। মূলত আলেকজান্ডারের ঘটনাবহুল জীবনের বাঁক শুরু হয় এখান থেকেই।

মসনদে আরোহের পর মাত্র ১৩ বছর জীবিত ছিলেন ইতিহাস সৃষ্টিকারী জেনারেল আলেকজান্ডার। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয় করে নেন পারস্য, মিসর, ব্যাবিলন ও ভারতের পাঞ্জাব। ফিলিপের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গ্রিসের নগর রাষ্ট্রগুলো দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। তরুণ আলেকজান্ডারের নেতৃত্ব মেনে নিতে চাইলেন না অনেকেই। আলেকজান্ডার বুঝতে পারলেন বিবদমান নগররাষ্ট্রগুলো এক শিবিরে আনতে না পারলে তাঁর পিতার পারস্য জয়ের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। আলেকজান্ডার প্রথমেই অভিযান শুরু করলেন বিদ্রোহী নগর রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে। খুব শক্ত হাতে বিদ্রোহ দমন করে অচিরেই সম্মিলিত বাহিনী প্রস্তুত করলেন পারস্য অভিযানের জন্য। আলেকজান্ডারের পদাতিক সৈন্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০ হাজার আর অশ্বারোহী সৈন্য ছিল প্রায় ৬ হাজার। তার ছিল ১২০টি জাহাজ এবং ৪০ হাজারের মতো নাবিক ও মাঝি-মাল্লা।

পারস্য অভিযানের আগে চতুর আলেকজান্ডার প্রথমেই অভিযান চালান বলকান অঞ্চলে। পারস্য প্রবেশের পথটা পরিষ্কার করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। আলেকজান্ডার বেশ কয়েকটি যুদ্ধ পরিচালনা করে পারস্য বিজয় করেন। এর পরে তিনি একদম বিনা বাধায় মিসর জয় করেন। তবে মিসর বিজয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বর্তমান ফিলিস্তিনের গাজা। গাজা জয় করে ইতিহাসে বিতর্কিত হয়ে পড়েন আলেকজান্ডার। গাজা জয় করে তিনি নির্বিচারে পুরুষদের হত্যা ও নারীদের বন্দি করেন। গাজা জয় করে তিনি টায়ার নগর অবরোধ করেন। টায়ারের পরিণতি হয়েছিল প্রায় গাজার মতোই। আলেকজান্ডার মিসরে পৌঁছলে তাকে মিসরের ফারাও ঘোষণা করা হয়। তার পরই শুরু হয় পারস্যের বিরুদ্ধে তার মূল অভিযান। বেশ কয়েকটি যুদ্ধের পর ৩৩১ খ্রিস্টপূর্ব বিখ্যাত গগোমেলার যুদ্ধে পারস্যের রাজা তৃতীয় ডরিয়াস চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন। পরাজিত ডরিয়াস সাম্রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে তার সেনাপতিরাই তাকে হত্যা করে। আলেকজান্ডার ৩২৭ খ্রিস্টপূর্ব ব্যাবিলন (বর্তমান ইরাক) ও ইরান জয় করেন। ইরান জয় জরে রাজকুমারী রোকসানাকে বিবাহ করেন। পারস্য বিজয়ের পর ৩২৭ খ্রিস্টপূর্র্ব হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে আলেকজান্ডার ভারতবর্ষ আক্রমণ করেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

সে সময় উত্তর-পশ্চিম ভারত অনেকগুলো বিবদমান ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত ছিল। আলেকজান্ডার প্রথমে পুষ্কলাবতীর রাজা অষ্টককে, তারপর অশ্বক জাতিকে পরাজিত করেন। অন্যদিকে তক্ষশীলার রাজা তার নিকট স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন। আলেকজান্ডার ভারতবর্ষে ১৯ মাস অবস্থান করে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।

‘আলেকজান্ডার’ যে রাজ্যই জয় করেছেন সেখানেই দীর্ঘদিন অবস্থান করে জনসাধারণের সাথে মিশে গিয়ে রাজ্য পরিচালনা করেছেন। অনেক দেশের জনগণের পছন্দের হয়ে উঠছিলেন তিনি। অত্যন্ত বিচক্ষণ আলেকজান্ডার মনে করতেন সকলের সাথে মিশে গেলে বিজিত রাজ্যে কোন গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা থাকবে না। নিজের আইন প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে। তাই তিনি শাসন কার্যেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। দীর্ঘদিন মাতৃভূমির বাইরে যুদ্ধ করে ক্লান্ত আলেকজান্ডারের সেনাবাহিনী আর সামনে অগ্রসর হতে চাইল না। তাই বাধ্য হয়ে তিনি ফিরে গেলেন পাঞ্জাব থেকে। পথিমধ্যে ব্যাবিলনে থাকা অবস্থায় নেবুচাদনেজারের প্রাসাদে অকস্মাৎ মৃত্যুবরণ করেন তিনি। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ইতিহাসবিদরা বছরের পর বছর বিতর্ক করে চলেছেন। কারও কারও মতে মদ কিংবা জ্বর নয়, বিষ প্রয়োগে মৃত্যু হয়েছে তার। আবার কেউ কেই বলছেন, ম্যালেরিয়ায় মারা গেছেন আলেকজান্ডার। একদলের দাবি টাইফয়েড। অধিকাংশ সূত্র এটা নিশ্চিত করেছে যে মৃত্যুর আগে তিনি টানা দশ দিন প্রচণ্ড জ্বরে ভুগেছিলেন। তবে সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে ৩২৩ খ্রিস্টপূর্ব ১১ জুন মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ইরাকের ব্যাবিলন শহরে আলেকজান্ডার মারা যান।

আলেকজান্ডার তাঁর মৃত্যুশয্যায় সেনাপতিদের ডেকে বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর তোমরা আমার ৩টা অভিপ্রায় পূরণ করবে। এতে যেন কোনো ব্যত্যয় না ঘটে। আমার প্রথম অভিপ্রায়, শুধু চিকিৎকরা আমার কফিন বহন করবেন। দ্বিতীয় অভিপ্রায়, আমার কফিন যে পথ দিয়ে গোরস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই পথে কোষাগারে সংরক্ষিত সোনা, রুপা ও অন্যান্য মূল্যবান পাথর ছড়িয়ে দিতে হবে। শেষ ইচ্ছা, কফিন বহনের সময় আমার দ্ইু হাত কফিনের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। তাঁর মৃত্যুশয্যায় উপস্থিত লোকজন মহাবীর আলেকজান্ডারের এই অদ্ভুত অভিপ্রায়ে বিস্মিত হন। কেউ প্রশ্ন করার সাহস পাচ্ছিলেন না। তখন আলেকজান্ডারের একজন প্রিয় সেনাপতি তাঁর হাতটা তুলে ধরে চুম্বন করে বলেন, ‘হে মহামান্য, অবশ্যই আপনার সব অভিপ্রায় পূর্ণ করা হবে, কিন্তু আপনি কেন এই বিচিত্র অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন?’ দীর্ঘ একটি শ্বাস গ্রহণ করে আলেকজান্ডার বললেন, ‘আমি দুনিয়ার সামনে তিনটি শিক্ষা রেখে যেতে চাই। চিকিৎকরা আসলে কোন মানুষকে সারিয়ে তুলতে পারেন না। তাঁরা ক্ষমতাহীন আর মৃত্যুর থাবা থেকে কাউকে রক্ষা করতে অক্ষম। গোরস্তানের পথে সোনা-দানা ছড়িয়ে রাখতে বলেছি কারণ মানুষকে এটা বোঝাতে যে ওই সোনা-দানার একটা কণাও আমার সঙ্গে যাবে না। আমি এগুলো পাওয়ার জন্য সারাটা জীবন ব্যয় করেছি, কিন্তু নিজের সঙ্গে কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না। মানুষ বুঝুক ধন-সম্পদের পেছনে ছোটা সময়ের অপচয় মাত্র। কফিনের বাইরে আমার হাত ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে এটা জানাতে যে, আমি খালি হাতে এই পৃথিবীতে এসেছিলাম, আবার আমি খালি হাতেই এই পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি’।

আলেকজান্ডার তার শিক্ষাগুরু এরিস্টটলকে এতটাই শ্রদ্ধা করতেন যে তিনি গুরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘জীবন পেয়েছি পিতার কাছে। কিন্তু সেই জীবনকে কী করে সুন্দর করতে হয় সে শিক্ষা পেয়েছি গুরুর কাছে।’ আকেজান্ডারের মৃত্যুর পরে তার যোগ্য কোন উত্তরাধিকারী ছিল না। যোগ্য উত্তরাধিকারীর অভাবে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর মেসিডনিয়ায় গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে তার সাম্রাজ্য অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে। উত্তরাধিকারী না থাকায় মৃত্যুর পর আলেকজান্ডারের সাম্রাজ্য তাঁর ৭ সাত সেনাপতি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। আলেকজান্ডার অন্তত বিশটি নগর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা এখনও তার নাম বহন করে। যার অন্যতম হলো মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া। তিনি যেখানেই রাজ্য বিস্তার করেছেন সেখানেই প্রাচীন গ্রিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। গ্রিক সংস্কৃতির মাধ্যমে হেলেনীয় সভ্যতা নামে এক নতুন সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। পনেরো শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের ঐতিহ্যগুলো যার স্বাক্ষর বহন করেছিল। সামরিক দক্ষতা ও বীরত্বপূর্ণ জীবনের মাধ্যমে নিজেকে একজন কিংবদন্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন জেনারেল আলেকজান্ডার।

লেখক : কলামিস্ট ও
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক, দৈনিক ভোরের দর্পণ
Email: [email protected]

Powered by