আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনে আগ্রাসনের কঠিন জবাব দেওয়া হবে : পুতিনকে বাইডেন

  প্রতিনিধি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ১:১২:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে যেকোনও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠিন জবাব দেবে পশ্চিমারা। রাশিয়ার যেকোনও ধরনের সামরিক উদ্যোগ সেখানে ব্যাপক দুর্ভোগের সৃষ্টি করবে এবং মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। 

গতকাল শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

ইউক্রেনে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা মস্কোকে সতর্ক করার একদিন পরে দুই প্রেসিডেন্ট এক ঘণ্টার জন্য ভিডিওকলে কথা বলেন।

এসময় পুতিনের উদ্দেশে বাইডেন বলেন, সামরিক আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনে বড় ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আর হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্ররা দ্রুত এ কড়া জবাব দেবে। রাশিয়াকে এজন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।

রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখ সেনা মোতায়েনের পর ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা দাবি করছে- যেকোনও মুহূর্তে সেখানে আক্রমণ শুরু হতে পারে। তবে রাশিয়া এই দাবি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

গতকালের ফোনালাপ ফলপ্রসূ হয়েছে কিনা কোনও পক্ষই তা জানায়নি। তবে বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এই আলোচনা পেশাদার ও বাস্তবসম্মত ছিল, তবে সার্বিক পরিস্থিতির মৌলিক কোনও পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে ক্রেমলিন বলছে, পুতিন বাইডেনকে বলেছেন- ওয়াশিংটন রাশিয়ার প্রধান উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও ইউক্রেনে সামরিক বাহিনী মোতায়েনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তারা কোনও ‘উল্লেখযোগ্য জবাব’ পায়নি।

বাইডেন প্রশাসনের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, পুতিন কূটনীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কিনা তা স্পষ্ট নয়, যদিও তিনি বাইডেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে রাজি হয়েছেন।

ইসরায়েল, পর্তুগাল ও বেলজিয়াম তাদের নাগরিকদের অবিলম্বে ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তাদের দূতাবাসের বেশিরভাগ কর্মীকে ইউক্রেন ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, তারা প্রায় ১৫০ জন সামরিক প্রশিক্ষককে সরিয়ে নিয়েছে।

আজ রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়া বলেছে, তারা কিয়েভে তার দূতাবাস খালি করছে। এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন চীনকে ইউক্রেনের পক্ষে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন এবং রাশিয়া তার সীমান্তে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়ে ‘নীরব’ না থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মরিসনের এই মন্তব্যের পর গত সপ্তাহে মেলবোর্নে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি বৈঠকের সমালোচনা করে চীন।

হোয়াইট হাউসের মতে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো গত ৫ ফেব্রুয়ারি পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। বাইডেনের শীর্ষ সামরিক ও কূটনৈতিক কর্মকর্তারা তাদের রাশিয়ান সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

পুতিন ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গেও কথা বলেছেন। যারা রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।

পুতিনের সঙ্গে ম্যাঁখোর ফোনালাপের পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের একজন কর্মকর্তা বলেন, ম্যাঁখোকে পুতিন যা বলেছেন তাতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা রাশিয়ার (সামরিক) অবস্থানের প্রতি অত্যন্ত সতর্ক। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এড়াতে আমরা তৎপর। -বিবিসি

Powered by