বাংলাদেশ

ইরানে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী মিশনের প্রধান হলেন সারা হোসেন

  প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২২ , ৪:৫৫:৩০ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

মানবাধিকার কর্মী সারা হোসেনকে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ইরানবিষয়ক তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সারা হোসেন, পাকিস্তানের শাহীন সরদার আলী এবং আর্জেন্টিনার ভিভিয়ানা ক্রিস্টিসেভিচের সমন্বয়ে তিন সদস্যের ওই মিশন নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি ফেদেরিকো ভিলেগাস।

গত ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ইরানবিষয়ক ওই স্বাধীন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি ওই কমিশন গঠন করবেন। আর এ বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ইরানের নাগরিক বিশেষ করে নারী ও শিশুদের সুরক্ষাসহ দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্তদের বিষয়ে কমিশন তদন্ত করবে।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের ওই মিশনকে কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও পরিস্থিতি উপস্থাপন এবং অধিকার হরণের বিষয়ে প্রমাণ সংগ্রহ, একত্রীকরণ এবং বিশ্লেষণ করতে হবে। তাদের যেকোনো আইনি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে এসব প্রামাণিক তথ্য ও প্রমাণ সংরক্ষণ করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। মানবাধিকার পরিষদের সভাপতি মিশনের পদগুলো পূরণের জন্য অত্যন্ত যোগ্য এবং নিরপেক্ষ প্রার্থী খুঁজে পেতে বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে সুপারিশ এবং তাদের আগ্রহের বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন।

অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য মিশনকে ইরানের সরকার, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর, মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর বিশেষ প্রতিবেদকসহ সব প্রাসঙ্গিক অংশীজনের সঙ্গে যুক্ত থাকার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। মিশনটি ইরানের পাশাপাশি জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গেও যুক্ত থাকবে।

জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের সদস্যরা তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষমতায় কাজ করবেন। তাঁদের ২০২৩ সালের জুনে অনুষ্ঠেয় মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশনে হালনাগাদ পরিস্থিতি মৌখিকভাবে উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপর মিশনের সদস্যদের পরিষদের ২০২৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠেয় পরিষদের ৫৫তম অধিবেশনে তাঁদের তথ্যানুসন্ধানের বিষয়ে একটি সমন্বিত প্রতিবেদন উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ ইরানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রাণঘাতী দমন-পীড়নের ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য একটি তথ্যানুসন্ধান মিশন গঠনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। জাতিসংঘের স্বাধীন ওই মিশন এ তদন্তের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হবে এবং দেশটির নারীদের সমর্থন করে শক্ত বার্তা দেওয়া হবে।

ইরানে মাসা আমিনি নামের এক তরুণী নিরাপত্তা হেফাজতে মারা যাওয়ার প্রতিবাদে নারীদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীকে হিজাব-সম্পর্কিত আইন লঙ্ঘনের দায়ে আটক করেছিল দেশটির নৈতিকতা পুলিশ।

এরপর এ আন্দোলন দেশটির অন্তত দেড় শ শহর ও ১৪০টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ আন্দোলনের সময় সহিংসতায় অন্তত ৩০০ জন নিহত হয়েছেন। এই আন্দোলনকে এখন বিবেচনা করা হচ্ছে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by