ধর্ম

ঈমানী মৃত্যু লাভের উপায়

  প্রতিনিধি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৬:১৬:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

Mufti Khalid Saifullah

Mufti Khalid Saifullah / মুফতী খালিদ সাইফুল্লাহ: কত শত বৈচিত্রের সমাহার আমাদের এ পৃথিবী, পরম করুনাময় আল্লাহ তা’য়ালার হাজার হাজার সৃষ্টি। একেক সৃষ্টির একেক ধরন। একই প্রজাতীর মধ্যে আবার কত ভিন্নতা। মানুষের কথাই যদি ধরি, কেউ সাদা, কেউ কালো, কেউ খাটো, কেউ লম্বা, কেউ উন্নত স্বাস্থ্যের অধিকারী, কারো দেহ হাড় জিড়জিরে। এসবের পাশাপাশি ধনী-গরীব শিক্ষিত-অশিক্ষিত ইত্যাদি আরও কত বৈচিত্র্যময় দিক। সবকিছু মিলিয়ে আমরা মানুষ, জগতের একটি ক্ষুদ্র সৃষ্টি। এমন আরো কত কিছু যে দয়াময় আল্লাহ সৃষ্টি করে রেখেছেন এ জগতে তা সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা যাবে না। এবং আমাদের নিকট তা অসম্ভব। কিন্তু যে বিন্দুটিতে এসে সকল বৈচিত্র্য মিলে একাকার হয়ে গেছে তা হচ্ছে – এ জগতে কোন কিছুই চিরস্থায়ী নয়। কোনটার আয়ু খুবই সামান্য, কোন টা আবার টিকে থাকে বহু বছর, এমনকি অনেক শতাব্দি। তবুও সবই ক্ষনস্থায়ী, সবই ধ্বংসশীল। দিনের শেষে টিকে থাকবে না কিছুই। ব্যতিক্রম কেবলই আল্লাহর মহান সত্তা।

”ভূপৃষ্ঠের যা আছে সবই নশ্বর। অভিনশ্বর কেবল তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।” (সূরা-আররহমান ৫৫)
জন্মিলে মরিতে হইবে, অমর কে কোথা কবে- এ কথাটি অস্বীকার করার সাধ্য নেই কারও। তাও শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয়, জগতের যত জীব সবকিছুকেই গ্রহন করতে হয় মরণের স্বাদ। পবিত্র কুরআনে এ চিরসত্যটি একাধিক স্থানে আলোচিত হয়েছে-
”প্রত্যেক প্রাণই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।” (সূরা-আল ইমরান)

আর এ মৃত্যুটা কারো জন্য কল্যানকর হয়, আবার কারো জন্য অকল্যানকর হয়। যদি ইমান নিয়ে মৃত্যুবরন করা যায়, তাহলে সেটা হবে তার জন্য কল্যানকর, আর যদি ঈমান বিহীন মৃত্যুবরণ করে তবে সেটা হবে তার জন্য অকল্যানকর। তাই আমাদের সকলের উচিত কিভাবে ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরন করা যায় সেদিকে লক্ষ রাখা। আর এজন্যই মুহাক্কিক উলামায়ে কেরামগন এমন দশটি আমলের কথা বলেছেন যেগুলোর উপর আমল করতে পারলে ইমান নিয়ে দুনিয়া হতে বিদায় নেওয়া আমাদের জন্য সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
১ . কু দৃষ্টি থেকে বেচেঁ থাকা।
২. নিয়মিত মেসওয়াক করা।
৩ . আল্লাহ তা’য়ালার দেয়া সকল নেয়ামতের শুকরিয়া আদার করা।
৪ . সাধ্যানুযায়ী আল্লাহর রাস্তায় সদকা করা।
৫ . আল্লাহ ওয়ালাদের সোহবত গ্রহণ করা।
৬ . আল্লাহর সঙ্গে মুহাব্বত রাখা।
৭ . আল্লাহকে ভয় করা। অর্থাৎ আল্লাহর ভয়ে গুনাহ বর্জন করা।
৮ . আযানের উত্তর দেয়া এবং আযানের দোয়া পড়া।
৯ . অধিক পরিমানে কালিমা পাঠ করা।
১০. বেশি বেশি আল্লাহর নিকট দোয়া করা।
পরিশেষে রাসূল (সাঃ) এর একটি হাদিস উল্লেখ করতে চাই। আর তা হলো যে রাসূল (সাঃ) বলেছেন,
”যেভাবে জীবন যাপন করিবে ওভাবেই তোমার মৃত্যু আসিবে”

এ হাদিসের আলোকে বলা যায়, যার জীবনাচর প্রশংসনীয় তার মৃত্যুও প্রশংসনীয়। আর যার জীবনাচর নিন্দনীয় তার মৃত্যুও নিন্দনীয়।

 

খতীবঃ মেরাদিয়া কবরস্থান মাদরাসা মসজিদ, খিলগাঁও ঢাকা।

Powered by