রাজশাহী

উল্লাপাড়ায় সড়কে তিন লাখ মানুষের দুর্ভোগ

  প্রতিনিধি ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৪:৪০:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

জয়নাল আবেদীন জয়, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ):

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বড়পাঙ্গাশী ইউনিয়নের বাংলাপাড়া থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তার এখন বেহাল দশা। চলনবিল অধ্যুষিত এই রাস্তাটি প্রায় ১যুগ আগে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে চলনবিলের প্রবাল ঢেউয়ে রাস্তাটি ভেঙে গেছে। রাস্তাটি ধসে যাওয়ার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দের। বর্তমানে এই পথে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটির এমন বেহাল দশায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

 

২০১৯ সালে স্থানীয় উল্লাপাড়ার সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের সহযোগিতায় সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু ঢেউয়ের আঘাত থেকে রাস্তা সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ পরিকল্পনা না থাকায় পরবর্তীতে ২০২০ সালের বন্যায় এই সড়কটি ভেঙে গেছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা পোহাচ্ছেন চরম দুর্ভোগ। সড়কটি সংস্কারে জন্য সংসদ সদস্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আন্তঃউপজেলা সংযোগ সড়ক হিসেবে নির্মিত ১৬কিলোমিটার দীর্ঘ এই পথ দিয়ে পার্শ্ববর্তী পাবনা জেলার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার লক্ষাধিক লোকজন চলাচল করে থাকেন। একই সঙ্গে ওই সব এলাকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও মালামাল এই সড়কের পরিবহন করা হয়। মূল সকড়টি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় রাস্তার দুই পাশ দিয়ে বিকল্প পথ হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনভাবে চলাচল করছেন এলাকার লোকজন। প্রতিদিনই এই সড়কে চলাচল মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রায় ৮ বছর পূর্বে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী রাস্তাটি সরেজমিন পরিদর্শ করে রাস্তাটি নির্মাণে সওজ বিভাগকে নির্দেশ দিলেও তা কাজে আসেনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এই রাস্তাটি ৩টি উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ উল্লিখিত পথে চাটমোহর ও ভাঙ্গুড়া থেকে উল্লাপাড়া হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। রাস্তাটির বর্তমান যে বেহাল দশা তাতে বিশেষ করে গুরুতর রোগী বা অন্তঃসত্তা মহিলাদের হাসপাতালে পাঠানো দুরহ হয়ে পড়েছে।

ফলে যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে বিলম্ব হওয়ায় অনেকেরই রাস্তার মধ্যে মৃত্যু হচ্ছে। বর্তমানে রাস্তার উপর এখন এক হাঁটু ধুলা। ফলে হালকা যানবাহনগুলো এখন এই পথে চলাচল করতে গিয়ে বার বার দুর্ঘটনায় প্রতিত হচ্ছে। আর এতে আহত হচ্ছেন লোকজন। তারা আরো জানান, তারা এই রাস্তা দিয়ে কৃষি পণ্য সহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করতেন। এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল জানান, উক্ত আঞ্চলিক সড়কের বাংলাপাড়া থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত অংশের বেহাল অবস্থার কথা তিনি জানেন। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য তিনি নির্বাচিত হবার পর থেকে প্রায় ৫ বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি তার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে দুভোর্গের শেষ হয়নি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এখানকার জনগনের জনমনে সৃষ্টি হয়েছে চরম ক্ষোভ।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বাংলাপাড়া থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ভেঙে যাওয়া অংশ নতুন করে তৈরি করার সময় পুরো অংশের উভয় পাশে ঢালে আরসিসি ব্লক ম্যাট্রেসিং করা প্রয়োজন। তা না করে রাস্তা সংস্কার করলে সেটা চলনবিলের ঢেউয়ের আঘাতে কখনই টিকবেনা। তিনি আরো বলেন, এই সড়কের ৩ কিলোমিটার অংশ আরসিসি ব্লক ম্যাট্রেসিংসহ একটি নির্মাণ প্রকল্প প্রণনয়ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে এই সড়ক তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আশরাফুল ইসলাম।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by