ঢাকা

কাপাসিয়ার এঁটেল ও বেলে দোয়াশ মাটির সমতল ভূমিতেও চা চাষ সম্ভব

  প্রতিনিধি ১২ নভেম্বর ২০২০ , ৬:১২:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

কাপাসিয়ার এঁটেল ও বেলে দোয়াশ মাটির সমতল ভূমিতেও চা চাষ সম্ভব

তপন বিশ^াস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : পাহাড়ি অঞ্চল কিংবা টেক টিলা ছাড়া সমতল ভূমিতেও যে চা চাষ সম্ভব তা প্রমাণ করেছেন দীর্ঘদিন চা বাগানের সাথে জড়িত এক বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান। কাপাসিয়ার তরগাঁও ইউনিয়নের চিনাডুলি গ্রামের নিজের সমতল ভূমির প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন দৃষ্টি নন্দন চা বাগান। ইতোমধ্যে তার বাগান থেকে সবুজ চা তৈরি শুরু হয়েছে এবং খুব শিঘ্রই তিনি বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন। অধ্যাপক মোঃ লুৎফর রহমান জানান, কর্মজীবনে তিনি সিলেট অঞ্চলের প্রায় ১৪-১৫টি চা বাগানে দীর্ঘ ৪০ বছর ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সব চা বাগানের মাটির সাথে কাপাসিয়া অঞ্চলের মাটির গুণগত মানে অনেক মিল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। তাই বহুদিন যাবৎ কাপাসিয়ায় চা চাষের পরিকল্পনা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। গত প্রায় দুই মাস আগে তিনি বানার নদীর তীরবর্তী প্রায় আধা বিঘা বেলে দোয়াশ মাটিতে চা চারা রোপন করেন, যা চমৎকারভাবে বেড়ে উঠছে। বর্তমানে প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি চা বাগান গড়ে তুলেছেন। তিনি আরো জানান, চা বাগানের জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো- চা গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকতে পারবেনা। কিন্তু মাটিতে পানি ধরে রাখার সক্ষমতা থাকতে হবে। তাই তিনি তার বাগানে পানি সেচের এবং ড্রেন দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন। আর চা বাগানে সিম জাতীয় কাঠ গাছ রোপনের নিয়ম থাকলেও তিনি সাধারণ কাঠ গাছই লাগিয়েছেন। চা চারা কলম এবং বিচি থেকে উৎপাদন করা গেলেও তিনি সিলেট অঞ্চল থেকে কলমের চারা কিনে এনেছেন। প্রতিটি চারা ২ ফুট দূরত্বে লাগানো হয়েছে এবং প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি ৮ হাজার চারা রোপন করেছেন। প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উৎপাদনে যাওয়ার আগ পর্যন্ত একর প্রতি সর্বসাকুল্যে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হবে। কিন্তু সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে ৩৫-৪০ বছর পর্যন্ত এখান থেকে চা পাতা সংগ্রহ করা যাবে। যদি শুধু কাঁচা পাতা বিক্রি করা হয় তবুও বছরে এক একর জমি থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। আর চা উৎপাদন করে বিক্রি করলে প্রায় আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। অথচ অন্য কোনো ফসল কিংবা ফল উৎপাদন করে দীর্ঘদিন এত বিশাল লাভ আশা করা যায় না। তাছাড়া বাড়ির আঙ্গিনাসহ যে কোনো পতিত জমিতেও চা চাষ সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। অচিরেই তিনি অর্থডক্স বা সিটিসি পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তখন তিনি স্থানীয় বেকার লোকদের কর্ম সংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারবেন। এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক বলেন, কাপাসিয়ায় চা চাষ শুরু হয়েছে, যা স্থানীয় লোকজনের জন্য খুবই আনন্দের বিষয়। এ ব্যাপরে সার্বিক সহযোগিতার আশ^াস দেন তিনি।

Powered by