রংপুর

খানসামায় মাছ ধরার সামগ্রী ভোরং

  প্রতিনিধি ২৭ জুন ২০২০ , ৮:২০:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় জমে উঠেছে মাছ ধরার সামগ্রী খোলসুন (ভোরং) এর বাজার। বর্ষায় নতুন পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে খাল বিল ডোবা ও নিম্ন অ ল পানির নিচে। কয়েকদিন ধরেই চলছে টানা বৃষ্টি। শত শত পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে মাছ। ফলে দেশীয় পদ্ধতিতে মাছ ধরায় মেতে উঠেছে ছোট-বড় সব বয়সের মানুষ। বিশেষ করে গ্রাম অ লের স্থানীয়ভাবে তৈরির বিভিন্ন জাল ও বাঁশের তৈরি ভোরং দিয়ে ছোট মাছ ধরার ধুম পড়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অবিরাম বর্ষণে গ্রাম অ লের ছোট ছোট পুকুর ডোবার বিভিন্ন জাতের মাছ ভেসে গেছে। এসব মাছ ছড়িয়ে পড়েছে মাঠের ফসলি জমিতে। এই সুযোগে গ্রাম অ লের লোকজন মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠেছে। বর্ষার মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে বাশেঁর তৈরি ভোরং নামের একটি যন্ত্র। এলাকা ভেদে এই যন্ত্রটিকে খোলসুন বলা হয়। আর বই-পুস্তকের ভাষায় বিটে বলা হয়। পানির মধ্যে এই যন্ত্রটি রেখে দেওয়া হয়। চলাচলের সময় ছোট ছোট মাছ গুলো বাশেঁর তৈরী এই ফাদের ভিতরে আটকা পড়ে। এটি গ্রাম অ লের মাছ ধরার খুব জনপ্রিয় একটি মাধ্যম।

উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট পাকেরহাটে শনিবার সকালে যেয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ভোরং আকার ভেদে ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া, গোয়ালডিহি, গারপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী নীলফামারী, রাণীরবন্দর, সৈয়দপুর এলাকার ব্যবসায়ীরা প্রায় ৩/৪ হাজার ভোরং বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। এছাড়াও আবার অনেকে নিজে হাতে ভোরং তৈরি করে বিক্রি করছেন।

আঙ্গারপাড়া বানিয়াপাড়ার থেন্নু, গোয়ালডিহি গ্রামের গিরিস ও গণেশ রায়, রাণীরবন্দর এলাকার মজিবরের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছরের বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস তারা এ মাছ ধরার যন্ত্র তৈরির কাজ করে থাকেন। প্রতিটি ভোরং তৈরিতে বাঁশ ও সুতা মিলে ১৫০/২০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আর বিক্রি হয় ৩০০-৫০০ টাকা ম‚ল্যে। বাশঁ কেনা থেকে শুরু করে সম্প‚র্ণ ভোরং তৈরিতে যে কষ্ট আর খরচ হয় সে তুলনায় লাভ বেশি হয় না। তবে এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। দিন-দিন খাল-বিল ও নদী নালার সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাছ শিকারীর সংখ্যাও কমে গেছে যার কারনে ভোরং এর চাহিদাও দিনদিন কমেছে। বর্তমানে সবকিছুর দাম বেশি সে তুলনায় তারা ভোরং এর ভাল দাম পাচ্ছেন না। সরকার এ শিল্প বাচাঁতে স্বল্প সুদে ঋণ দিলে তাদের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে পারতেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by