চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের প্রবেশপথে চলছে সেনাবাহিনীর তল্লাশি

  প্রতিনিধি ১ জুলাই ২০২১ , ৫:১২:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ‘কঠোর লকডাউন’। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, এবারের লকডাউনে কড়াকড়ির বিষয়টি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার লকডাউন মাঠে নামল সেনাবাহিনী।

ভোর থেকেই বন্ধ করা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরের সব প্রবেশ পথ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি ও পথচারীদের বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করছেন তারা।

এছাড়াও লকডাউনে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রবেশ পথে মোতায়েন করা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মাঠে রয়েছে পুলিশ, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও আনসার সদস্যরা।

সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর এই লকডাউনের প্রথম দিন সকাল থেকেই পাল্টে গেছে নগরের চিত্র। সড়কে নেই অন্যান্য দিনের মতো অফিসমুখী মানুষের চাপ, নেই যানবাহনের ছুটে চলা, বন্ধ রয়েছে দোকানপাট।

সকাল থেকে নগরের রাস্তায় টহল দিতে দেখা যায় সেনাবাহিনীর সদ্যসদের। সকালে নগরের প্রবেশদ্বার সিটি গেইটে দেখা যায় সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিধিনিষেধ মানাতে সেনাবাহিনীর ৭ টি টিম সকাল ৮ টা থেকে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে মাঠে রয়েছে। তারা রাত ৮ টা পর্যন্ত টহলে থাকবে। শাহ আমনাত সেতু ও সিটি গেট চেকপোস্টে সার্বক্ষণিক সেনাবাহিনী মোতায়ন থাকবে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পৃথক টিম সার্কিট হাউস থেকে একযোগে সকাল সাড়ে ১০টায় অভিযান শুরু করেছেন। এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, র‍্যাব ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান জানান, চট্টগ্রামের প্রধান দুই প্রবেশপথ সিটি গেইট ও শাহ আমানত সেতু এলাকা ছাড়াও নগরীর অক্সিজেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, মইজ্যার টেক ও বায়েজিদ লিংক রোড এলাকায় থাকছে পুলিশের চেকপোস্ট। অন্যদিকে সাতকানিয়ার কেরানী হাট, সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ও মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জেও থাকছে আরও তিনটি চেকপোস্ট।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, নগরীর সাতটি প্রবেশমুখে পুলিশের চেকপোস্ট থাকছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের ১২ টি টিম মাঠে টহলে থাকছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লকডাউন চলাকালে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া-চকবাজার এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা জান্নাত, খুলশী এলাকায় ইনামুল হাসান, কোতোয়ালী এলাকায় মো. উমর ফারুক, বায়েজিদ এলাকায় জিল্লুর রহমান, পাঁচলাইশ-চান্দগাঁও এলাকায় রেজওয়ানা আফরিন, হালিশহর এলাকায় মাসুদ রানা, বন্দর-ডবলমুরিং এলাকায় নূরজাহান আকতার সাথী, আকবরশাহ-পাহাড়তলী এলাকায় ফাহমিদা আফরোজ এবং বায়েজিদ এলাকার দায়িত্বে রয়েছেন প্লাবন কুমার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কঠোর লকডাউন অমান্য করে বিনা কারণে সড়কে আসা ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় থেকে তাদের আটক করা হয়। এছাড়া সকাল থেকে ডবলমুরিংসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বিনা প্রয়োজনে বের হওয়া পাঁচটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে ১০টি গাড়ির বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, লকডাউনে কেউ যাতে বিনা কারণে বাসা থেকে বের না হন, সে ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। কিন্তু অনেকেই বের হচ্ছেন। জিজ্ঞেস করলে বলছেন লকডাউন কেমন চলছে সেটা দেখতে বের হয়েছেন। এমন ২১ জনকে আমরা আটক করে প্রায় ২ ঘণ্টার বেশি সময় নিজেদের হেফাজতে রেখে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by