বাংলাদেশ

জাফরুল্লাহর বক্তব্যে বাধার প্রতিবাদে ১০ বীর মুক্তিযোদ্ধার বিবৃতি

  প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২১ , ৭:৩৪:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

গত শনিবার শিক্ষা বিষয়ক এক গোল টেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ইংগিত করে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে বাধা দেন ছাত্রদলের নেতা। ছবি : অনুষ্ঠানের

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কয়েক নেতার বাধা দেওয়ায় প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ১০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তারা হলেন, ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক বাংলাদেশ কল্যাণপার্টির চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ফারুক-ই-অযম বীর প্রতীক, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাহাঙ্গীর কবীর, অ্যাডভোকেট সুলতান আলম মল্লিক, এম এ শহীদ, হাবিবুর রহমান, আবুল বাশার ও অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।

আজ মঙ্গলবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা এ প্রতিবাদ জানান। জোট নেতা ইবরাহিম ও দলের নেতা উলফাতের ভিন্নতাও রয়েছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৬ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ আন্দোলন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিএনপি’র বিদেশে অবস্থানকারী নেতা-মুখাপেক্ষি নির্দেশ ও দুর্বল নেতৃত্ব সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বক্তব্য রাখার সময় ছাত্রদলের একজন নেতা কয়েকজন সঙ্গীসহ বাধা প্রদান করে। এ সময় তাকে অশালীন মন্তব্য ও হুমকি-ধামকি দেয়। ছাত্রদলের নেতাদের এহেন আচরণ ও একজন রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি প্রদানে আমরা গভীরভাবে উদ্বীগ্ন এবং বিক্ষুদ্ধ।

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, আমরা উল্লেখ করতে চাই ১৯৭১ সালে যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি তা আজ দুঃস্বপ্ন। আজকের দুর্বিসহ অবস্থার প্রেক্ষিতে যেখানে জনগণের দাবী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলা সেখানে বিএনপি’র এসব নেতার এহেন আচরণে তা বাধাগ্রস্থ হবে।

সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘মত প্রকাশের অধিকারকে সম্মান করতে হবে। ডা. জাফরুল্লাহ একজন সম্মানিত ব্যাক্তি। তবে বিবৃতিতে ‘বিএনপির বিদেশে অবস্থানকারী নেতা-মুখাপেক্ষি নির্দেশ ও দুর্বল নেতৃত্ব’ এই বাক্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। কারণ, বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। বিএনপির নেতৃত্বে আমরা ইতিবাচক ও ঐক্যবদ্ধ আছি।’

ইশতিয়াক আজিজ উলফত বলেন, ‘আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে নেগেটিভ বক্তব্য দেওয়া উচিত হয়নি। আমি মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি। আমার নেতার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তো সহ্য করবো না- এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ডা. জাফরুল্লাহকে হুমকি দেওয়ায় এর প্রতিবাদ জানিয়েছি। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বয়স ৮০ বছর, তিনি অসুস্থ। ডায়ালাইসিস করাতে হয় সপ্তাহে ৪ দিন। দেশের একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাকে তো হুমকি দিতে পারে না।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমি বারবার বলেছি- তারেক তুমি দুই বছর চুপচাপ বসে থাকো। পারলে বিলেতে (বিদেশ) লেখাপড়ায় যুক্ত হয়ে যাও, সেখানে বহুভাবে লেখাপড়া হয়। জাফরুল্লাহর এমন বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে যান সভায় উপস্থিত থাকা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক কাওছার সালাম দিয়ে ডা. জাফরুল্লাহকে থামিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি বিএনপির কে? আপনি বিএনপি নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলেন? জবাবে জাফরুল্লাহ বলেন, না কেউ না। এটা তো গণতন্ত্রে আমার বলার অধিকার আছে। তখন ছাত্রদলের ওই নেতা বলেন, না। আপনি অন্যদের নিয়ে বলুন। আমাদের নেতা সম্পর্কে বলছেন, আপনি তো বিএনপির কেউ না। আপনি আমাদের নেতাদের নিয়ে কখনো কথা বলবেন না। কখনোই কথা বলবেন না। আর যদি কখনো কথা বলেন, কিছু হলে আমরা দায়ী থাকব না।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by