রাজশাহী

জাহান্নামের প্রধান সড়ক!

  প্রতিনিধি ২০ মে ২০২৩ , ৫:৪৭:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ


মেহেদী হাসান সুমন, বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি :


বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রাণকেন্দ্র পৌর এলাকার প্রধান ও জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কে ভোগান্তি বেড়েই চলছে। দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দের মধ্যেই চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনসহ পথচারীদের। পৌরসভা, এলজিইডি ও উপজেলা প্রশাসন এখনো এ ব্যাপারে নিরব। রাস্তাটি যেনো দিন দিন জাহান্নামের রাস্তায় পরিণত হচ্ছে। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে জনসাধারণের মাঝে। জেলা শহর নাটোর থেকে বিহারকোল বাজার হয়ে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, রেল স্টেশন, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যান্টনমেন্ট, উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার প্রধান এবং একমাত্র যায়। ড্রেন করে দেওয়ার পাশাপাশি সড়কের ওই অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের মতো স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থার দাবি এলাকাবাসীর।

পৌর এলাকার কয়েক ভ্যান ও অটোচালক বলেন, এই পথে চলতে গিয়ে আমাদের যানবাহন প্রায়ই বিকল হয়ে যায়। ফলে গোটা দিনের রোজগারই চলে যায় তা মেরামত করতে। তাহলে আমরা সংসার চালাব কী করে? একই এলাকার আব্দুল মোমিন বলেন, এই রাস্তা দিয়ে যেতে হলে যেনো যুদ্ধ করতে হয়। কোনো গাড়িতে চড়েও যাওয়া যায় না, আবার দীর্ঘ রাস্তা পানির মধ্য দিয়ে হাঁটাও যায় না; খুব বিপদে আছি আমরা। উপজেলার প্রধান সড়ক হওয়ায় বাধ্য হয়েই প্রতিনিয়ত আমাদের চলাচল করতে হয়। এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। মাঝে মাঝে ছোট ছোট দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে আমাদের। দ্রæত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

প্রতিদিনই এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মেয়র, প্রকৌশলী, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রোগীসহ হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। প্রসূসিহ বিভিন্ন রোগীরও এই সড়ক দিয়েই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার প্রধান সড়ক সংলগ্ন বাগাতিপাড়া পৌরসভার সোনাপাতিল এলাকায় প্রধান সড়কটির আধা কিলোমিটার জুড়ে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নেই। ফলে সড়কে পানি জমে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষায় এই স্থানে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তির সীমা থাকে না। আরও জানা যায়, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র মালঞ্চিবাজার থেকে নাটোর-বাগাতিপাড়ার জনগুত্বপূর্ণ সড়কের কসবে মালঞ্চি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ ২০১৮ সালের মে মাসে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে করা হয়; কিন্তু বছর না ঘুরতেই সোনাপাতিল এলাকায় ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আর দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গর্ত বড় হয়ে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি সংস্কার করা হলেও পরিকল্পনার অভাবে পরের বছরই বিভিন্ন স্থানে ভেঙে ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া এই মহল্লাটি পৌর এলাকার হলেও পৌরসভা থেকে এলাকার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে।

উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান বলেন, সড়কটি মূলত পৌরসভার অধীনে। তার পরও উপজেলার প্রধান সড়ক হওয়ায় আমরা গত বছর সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়েছিলাম। তবে বরাদ্দ কম থাকায় অনুমোদন হয়নি। নতুন বরাদ্দ সংগ্রহ করে দ্রæত সংস্কারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া নতুন করে একটি প্রকল্পেও রাস্তাটি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রæত রাস্তার কাজ করা হবে বলেও তিনি জানান। পৌর মেয়র এ কে এম শরিফুল ইসলাম লেলিন বলেন, সড়কটি পৌরসভার কিংবা এলজিইডির- এটা বড় কথা নয়। এটি উপজেলার প্রধান সড়ক। তবে এই সড়কটি সংস্কার করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার সক্ষমতা এই পৌরসভার নেই। তাই এলজিইডিকে কাজটি করার জন্য আমরা অনাপত্তিপত্র ইতোমধ্যে দিয়েছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেছি। এটা একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। গত বছর রাস্তাটি সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্পে পাঠানো হয়েছিল। তবে তা অনুমোদন না হওয়ায় আমি ও এলজিইডি মিলে পুনরায় চেষ্টা করছি। মেয়র আরও বলেন, একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে এই সড়কটিকে জাহান্নামের রাস্তা বলে স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ব্যর্থ বলেছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভার.) রিয়াজুল ইসলাম।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by