জয়পুরহাটের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার নেই

জয়পুরহাট প্রতিনিধি :

সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকার কথা থাকলেও জয়পুরহাটের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পার হতে চললেও ভাষা শহীদদের স্মরণে এসব প্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠেনি তেমন কোন স্থায়ী অবকাঠামো। ফলে একুশে ফেব্রæয়ারি আসলে অনেক প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয় না। যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে সেগুলো সারা বছর পড়ে থাকে অযত্নে অবহেলায়। ফেব্রæয়ারি মাস আসলেই শুরু হয়ে যায় এসব শহীদ মিনার ধোয়া-মোছার কাজ।
জয়পুরহাট জেলায় সরকারী-বেসরকারী সব মিলে ২১ টি কলেজ, ২৩ টি কারিগরি কলেজ, ৪ টি স্কুল ও কলেজ, ১ শ ১১ টি মাদ্রাসা, ১ শ ৫২ টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩শ ৭১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। জেলায় সব মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ শ ৮২ টি । এরমধ্যে ২ শ ২৮ টিতে নেই কোন শহীদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভ। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এসব প্রতিষ্ঠানে তৈরী হয়নি কোন শহীদ মিনার। সংখ্যার হিসাবে জয়পুরহাট জেলায় শতকরা ৩৩.৪৩ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার।

জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, জেলার মোট ৫টি উপজেলায় ৩শ ৭১ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার ছিলনা সেখানে সরকারী নির্দেশে প্রতিটিতে শহীদ মিনার তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবির জানান, কিছু কিছু বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার আছে। যেখানে নেই সেখানে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য এসব শহীদ মিনার বানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে শতভাগ। তবে জেলার মধ্যে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত একটিমাত্র শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নেই কোন শহীদ মিনার। এটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধিনে নয়।

এব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ৩শ ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এরমধ্যে ২১ টি কলেজ, ২৩ টি কারিগরি কলেজ (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ), ৪ টি স্কুল ও কলেজ, ১ শ ১১ টি মাদ্রাসা, ১ শ ৫২ টি উচ্চ বিদ্যালয়। ২০২০ সালের তথ্যমতে এসবের মধ্যে ২শ ২৮ টিতে নেই কোন শহীদ মিনার। জেলা শিক্ষা অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর লুলুয়ে আরাফাত জানান, এব্যাপারে আমরা একটি তালিকা করে জেলা পরিষদের নিকট হস্তান্তর করেছি। তারা পর্যায়ক্রমে যেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই সেখানে তৈরি করে দিবেন বলে আমরা আশা করছি।

এব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে স্কুলগুলোতে শহীদ মিনার শতভাগ থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের যেসব উচ্চ বিদ্যালয় বা কলেজ আছে তারমধ্যে মাদ্রাসাগুলোতে নেই কোন শহীদ মিনার। তবে এখন বিভিন্ন মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম জানান, জেলার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে তারা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করবে বলে আশা করছি।