দেশজুড়ে

ঝালকাঠিতে অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছে সহস্রাধিক ড্রাইভার শ্রমিক !  

  প্রতিনিধি ২১ এপ্রিল ২০২০ , ৭:৩২:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

আতাউর রহমান, ঝালকাঠি প্রতিনিধি ঃ করোনার ভয়াল তাণ্ডবনীলায় আক্রান্ত, এ সময়ে কর্মহীন ঝালকাঠির সহস্রাধিক অটোরিকশা, ম্যাজিক ও রেন্ট-এ-কার ড্রাইভার শ্রমিকদের যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় ঐ সকল দিনমজুর খেটে খাওয়া শ্রমিকদের জীবন আজ বিপন্ন । মান সম্মানের ভয়ে কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না এ শ্রমিকরা।

স্ত্রী, সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন আর মনে মনে ভাবেন কিভাবে তাদের মুখের আহার যোগাবেন, কে দিবে তাদের খাবার।‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ প্রায় এক মাস হলো কর্মহীন জীবন চলা ঐসব ড্রাইভার শ্রমিক যাদের বেশিরভাগ শ্রমিকই ঋণে জর্জরিত। কিস্তি দেয়া বন্ধ থাকলেও নতুন করে আর ঋণ নেওয়ার কোন সুযোগ নাই তাদের, নিত্য নতুন যাদের ইনকাম ছিল আজ তারা পকেট শূন্য  খালি হাতে  ঘরে বসে আছেন। চা, পান ও সিগারেট না খেলে যাদের সময় কাটতো না তাদের আজ একটি টাকাও হাতে নেই কিছু খাবার কিনতে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকে কেউ সাহায্য নিয়ে আসে কিনা  তাদের বাড়িতে। কিন্তু কই কেউ তো আসছেন না তাদের সাহায্য দিতে। এ রকম অভিব্যক্তি জানালেন ভুক্তভোগী এক ড্রাইভার।

এ বিষয়ে কথা হয় ঝালকাঠি জেলা মেক্সি পরিবহন সমিতির সভাপতি মোঃ নান্নু মুন্সির সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, করোনা ভাইরাসে আমাদের শ্রমিকরা কর্মহীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত স্থানীয় কাউন্সিলর রেজাউল করিম জাকির সাহেব ৫ কেজি চাল, ১ কেজি আলু, আধা কেজি চাল একবার সাহায্য প্রদান করছিলেন। এছাড়া ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯২ জন ম্যাক্সি শ্রমিকদের একবার চাল, ডাল, আলু, তেল, সাবান দিয়েছেন তাতে কয়েক দিন চলেছে আমাদের। তিনি আরো জানান,মেক্সি ড্রাইভাররা চার চাকার গাড়ির ড্রাইভার। সবাই ভাবেন তারা ভালো আছে, আসলে আমরা মোটেও ভালো নেই, আমাদের দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে।

অপরদিকে, অটোরিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা আবু সাঈদ খান জানান, আমি ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আবেদন করলে তিনি প্রায় ২ হাজার শ্রমিকদের মধ্য হতে ৪শত জনকে ১০ কেজি চাল ৫কেজি আলু ২ কেজি ডাল ২ কেজি তেল, ২ খানা সাবান দেন যা ৮০০ জন শ্রমিকের মধ্যে ভাগ করে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য আর কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি অটোরিকশা শ্রমিকরা। তবে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি সকলকে সাহায্য সহযোগিতার আওতায় আনার জন্য।

অন্যদিকে, ঝালকাঠির প্রায় ৬০জন রেন্ট-এ-কার শ্রমিকরা একটু  সৌখিন পেশায় নিয়োজিত থাকায় তাদের দিকে চোখ পড়ছে না কারো। আসলে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া এই মানুষগুলো করোনাভাইরাস আতঙ্কে কর্মহীন  হ‌ওয়ায় চরম দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেউ তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক  অভুক্ত ড্রাইভার। মেক্সি পরিবহন, অটো রিক্সা ওরেন্ট এ কার ড্রাইভারগণ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তাদের প্রতি সদয় সুদৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by