বাংলাদেশ

তারা স্বাধীনতার ইতিহাসও বিকৃত করেছিল: প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৮:২৬:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জন, ভাষার যে অধিকার একে একে সবই তারা (বিএনপি নেতারা) মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। ভাষা আন্দোলনের নাম থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম তো মুছেই ফেলা হয়েছিল, এমন কী স্বাধীনতার ইতিহাসও বিকৃত করা হয়েছিল।’

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ, জয় বংলার স্লোগান নিষিদ্ধ—এমন কী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটাকেই বিকৃত করা হলো। যেখানে ভাষার জন্য এত রক্ত দিতে হলো, সেখানে সে ইতিহাসকেও বিকৃত করা হয়েছিল। আর এই ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর একটি মাত্র ভাষণ, যা একজন মানুষ দিয়ে গেছেন। এই ভাষণ পৃথিবীর কত কোটি মানুষ যে শুনেছে, আর কতবার যে এই ভাষণ বেজেছে—তা হিসাব করে বলা যাবে না।’

এ সমর আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যতবেশি বাধা-বিপত্তি এসেছে, ততবেশি বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাজিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি যেমন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে, ঠিক সেইভাবে ৭ মার্চের ভাষণ মর্যাদা পেয়েছে। ইউনেস্কো বিশ্বের আড়াই হাজার বছরের যত ভাষণ সামরিক বা অসামরিক নেতৃবৃন্দ দিয়ে স্বাধীনতার চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে, সেই ভাষণের মধ্যে সর্বশেষ্ঠ ভাষণ হচ্ছে ৭ মার্চের ভাষণ। কাজেই সেই স্বীকৃতিটাও কিন্তু আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে রেখে গিয়েছিলেন স্বল্পোন্নত দেশে। যারা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী, যারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাসই করত না এবং বিরোধিতাও করেছিল। তারা ভেবেছিল, এই দেশ আর কোনোদিন দাঁড়াতে পারবে না। এ দেশে কখনো আর উন্নতি করতে পারবে না।’

‘তারা চেয়েছিল বাঙালি ওই ভিক্ষুক জাতি হিসেবেই থাকবে। মাত্র ৩ বছর ৭ মাস ৩ দিন ক্ষমতায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। এরই মধ্যে বাংলাদেশকে একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে গড়ে তোলা, ধ্বংসপ্রাপ্ত সকল রেল ব্রিজ, সড়ক ব্রিজ থেকে শুরু করে সব কিছু গড়ে তোলা হলো। স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা সব কিছু গড়ে তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধু’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই উন্নয়নের বিষয়গুলো মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে ভোট নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। আমরা দেশের জন্য ও এলাকার জন্য যে কাজ করেছি, তা যদি ঘরে ঘরে পৌঁছিয়ে দিতে পারেন, তাহলে ভোটের আর কোনো আমাদের সমস্যা নাই। এই ক্ষমতা আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আর যাই হোক ওই দানবদের (বিএনপি) হাতে দেশকে আর ফেলে দিতে পারি না। উন্নয়নের সব কাজ ওরা ধ্বংস করে দেবে।’

বিএনপির উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারপরও তারা (বিএনপি নেতারা) দেশে-বিদেশে হাহাকার করে বেড়ায়, কেঁদে বেড়ায়। মনে হচ্ছে বাইরে থেকে কেউ এসে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেই স্বপ্নে তারা বিভোর। হয়তো এক সময় সেটি করতে পেরেছে দালালি করে। কিন্তু এখন আর দালালি করে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। পারবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা নিজের দেশ সম্পর্কে অনেক জানে। ইতিহাস সম্পর্কে জানে। আমাদের লক্ষ্য কী সেটাও তারা জানে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর, পরপর আমরা দুবার ক্ষমতায় এসেছি। আমরা তো জনগণের জন্য কাজ করেছি, এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে। শুধু ঢাকা শহর না, সমগ্র বাংলাদেশেই উন্নয়ন করেছি। বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। ভূমিহীন থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করেছি।’

১০ ডিসেম্বর বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা এখন আন্দোলন করছে, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি হম্বিতম্বি করেছে। তারা মিছিল করেছে, মিটিং করেছে। আমরা বাধা দেইনি।’

Powered by