দেশজুড়ে

তেরখাদার ভুতিয়ার বিলে সোনালী ধানের পরিবর্তে পদ্ম আর শাপলা ফুলের মেলা

  প্রতিনিধি ৩১ আগস্ট ২০২০ , ৭:২৯:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

জিয়াউল ইসলাম, খুলনা সদও : বৃষ্টি শূন্য মেঘের ছায়ায় ফুটে আছে পদ্ম আর শাপলা। রোদের তীব্রতায় ফুলগুলোও যেন অনেকটা নির্জীব। ভূতিয়ার বিলের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা, আকুলতা, শূন্যতা, গহীন বৃত্তান্ত কেবল তেরখাদা উপজেলাবাসীই মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছে। বিলটির দিকে তাকালে সবুজ সোনালী ধানের পরিবর্তে পদ্ম, শাপলা আর পানির ঢেউ চোখে পড়ে। দুর থেকে দেখলে মনে হয় যেন রঙের মেলা বসেছে। শরতের আকাশে মেঘের ভেলার নিচে দিগন্ত জোড়া পদ্ম আর শাপলা ফুলের মেলা। তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিলের এমন মনরম পরিবেশ দেখতে প্রতিদিন দুর দুরন্ত থেকে অনেক ভ্রমণপ্রেমি এখানে বেড়াতে আসে। পদ্ম ফুলের সৌন্দর্যে তাদের স্বাগত জানান। ভুতিয়ার বিলে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পদ্মফুল আর শাপলা ফুল ফুটেছে। এরই মাধ্যমে মৌসুমী কর্মসংস্থান চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে তেরখাদা উপজেলার সুনাম। ভ্রমন পিপাসুদের উপস্থিতিতে নৌকার কদর বেড়েছে। পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুতিয়ার বিলে খুলনা শহর থেকে ঘুরতে আসা সাব্বির, জাকারিয়া, আব্দুর রহমান, সেলিম, আব্দুল কুদ্দুস, জাহানারা ও সুমাইয়া বলেন তেরখাদার ভুতিয়ার বিল অসাধারন, না দেখলে বিশ্বাস হয় না। ফুল ফুটে রয়েছে, পদ্মপাতার উপরে পানি টলমল করছে। ছোট ছোট পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে, হোগলাবন আর পানিতে ভাসমন পদ্মপাতার মধ্য দিয়ে ছোট ডিঙ্গি নৌকা চলছে। চারিধারে পদ্মফুল যেন দর্শনার্থীকে স্বাগত জানাচ্ছে। দেশি মাছের ভান্ডার পদ্মবিল। কৈ, শিং, মাগুরের মজুদ এখানে। এছাড়া রয়েছে শৈল, গজাল, রয়না, খলিশা, পুঁটিমাছ সহ দেশি অনেক প্রজাতির মাছ। শীতে পানি কমতেই জাল, পোলো নিয়ে মাছ ধরতে নেমে পড়ে অনেকেই। চারদিকে থাকে তখন উৎসবের আনন্দন। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ভুতিয়ার বিলের আয়তন প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে মাত্র ৪০/৫০ হেক্টর জমিতে পদ্মফুল ফোটে, বাকি আগাছা ও শেওলায় ভরা। খুলনার তেরখাদা উপজেলা ও নড়াইল জেলার অংশবিশেষ নিয়ে প্রাকৃতিকভাবে ভূতিয়ার বিলটির সৃষ্টি। ২০০৩ সাল থেকে ভূতিয়ার বিলের ২০ হাজার একর জমি স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা বলেন, পর্যাটন একটা সম্ভাবনাময় খাত, এ ব্যপারে উপজেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা আছে, কিভাবে পর্যাটন খাতকে সৃষ্টি ও সমৃদ্ধ করা যায় সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ভবিষ্যতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সাবেক ফুটবল তারোকা আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আমার নির্বাচিত এলাকা তেরখাদায় কোন শিল্প কারখানা নেই। এখানকার মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি, মৎস এবং ব্যবসা। ভুতিয়ার বিল নিয়ে সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by