আইন-আদালত

দিনভর কারাফটকে সাংবাদিকরা, রোজিনার জামিন হলো না আজ

  প্রতিনিধি ২০ মে ২০২১ , ৫:৫১:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

messenger sharing button

রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। বৃহস্পতিবার তার জামিন বিষয়ে শুনানি থাকায় সকাল থেকে কারাফটকে অবস্থান নেন সাংবাদিকরা। কিন্তু আজ তার জামিন হয়নি। শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ আগামী রোববার দিন ঠিক করে দিয়েছেন আদালত।

আদালতের এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন কাশিমপুর কারাফটকে রোজিনা ইসলামের জন্য অবস্থানরত সাংবাদিকরা। রোজিনা ইসলামের জামিন হবে এবং তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হবেন- এমন প্রত্যাশায় সকাল থেকেই কারাফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।

রোজিনার জামিন বিষয়ে শুনানির দিনে কাশিমপুর কারাফটকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ফটকের সামনে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।

সকাল থেকে গাজীপুরের স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাসহ ঢাকা থেকে বিভিন্ন টেলিভিশন, পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকেরা জড়ো হতে থাকেন কারাফটকে। কিন্তু বিকালে জানা গেল আদালত রোজিনার জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন আগামী রোববার।

এর আগে দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লার ভার্চুয়াল আদালতে তার জামিন শুনানি শুরু হয়। রোজিনার জামিন শুনানি করেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি ও প্রশান্ত কুমার কর্মকার। দুপুর ২টার দিকে শেষ হয় তার জামিন শুনানি।

রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কারাফটকে অপেক্ষারত গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, রোজিনা ইসলামকে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাকে গণমাধ্যমের জন্য অশনিসংকেত। শুরু থেকে এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই। রোজিনা ইসলামকে আটক করা মামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপরে নগ্ন হস্তক্ষেপ। তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

তারা আরও বলেন, রোজিনা ইসলামের মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিকর জন্য কারাগারের সামনে দাঁড়াতে হচ্ছে, এটি লজ্জাজনক। তাকে হেনস্তা ও জেল-জুলুম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। রোজিনা ইসলামের মামলা প্রত্যাহার ও তাকে হেনস্তাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবেন মাঠের সাংবাদিকেরা।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ মে দুপুরের পর পেশাগত দায়িত্ব পালনে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে রোজিনাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  তাকে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ এনে ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ আইনে মামলা করা হয়।  মামলার বাদী হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।

পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ মে আদালতে হাজির করে।  একইসঙ্গে রোজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।  অন্যদিকে রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবীরা।  ওই দিন শুনানি নিয়ে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করেন এবং রোজিনার জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য ২০ মে দিন ধার্য করেন।  সেদিন আদালতের নির্দেশে রোজিনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধিতে করা এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব ১৯ মে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) দেওয়া হয়েছে।  ডিবি বৃহস্পতিবার (২০ মে) জানিয়েছে, রোজিনার মামলার বিষয়ে তারা কোনো চাপে নেই।  স্বাধীন তদন্ত হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by