বাংলাদেশ

দেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২২ , ৫:৪০:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার গণতন্ত্রকে নিরাপদ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্রকে সুরক্ষা ও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যাতে জনগণ ন্যায়বিচার পায়।

সুপ্রিম কোর্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বিচারকদের সাহসিকতায় এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে এবং দেশ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেয়েছে।

আজ বৃহস্পিতিবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১২তলা ভবন ‘বিজয় একাত্তর’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। নগরীর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিচার বিভাগের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, নির্যাতিত নারী, শিশু ও এসিড হামলার শিকারসহ সবাই যাতে সুবিচার পায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ করেছে এবং বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে ও সংবিধানের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের সাধুবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এই রায়ে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।

আদালত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে দেশকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিচারকদের সাহসী পদক্ষেপে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি এবং খুনিদের বিচারের রায়ও, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে আমরা কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছি। সেজন্য সব সময় আমি আদালত, নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। অন্তত ন্যায়বিচারটা আমরা পেয়েছি। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, জেলা আদালতগুলোকে উন্নত করা হয়েছে। জজ সাহেবদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ এই বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনাও ঘটেছে, বোমা মেরে কোর্টে জজদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে জনসাধারণ ন্যায়বিচার পাবে এবং বিচারকাজ আরো ভালোভাবে চলবে।

রেকর্ড রুম করতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে রেকর্ড রুম খুবই প্রয়োজন ও রেকর্ডগুলো যাতে নষ্ট না হয়। এটারও ব্যবস্থা করা। এগুলোকে ডিজিটালাইজ করে ফেলা। হার্ড কপিও রাখতে হবে, ডিজিটালাইজও করে ফেলতে হবে। ইতোমধ্যে রেকর্ড রুম করার জন্য আমি অর্থ সচিবকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি।

সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ১২তলা ভবন বিজয় একাত্তরের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, এ ভবনটা, সেখানে আমরা আরো বিচারক নিয়োগ দিতে পারবো। প্রথমবার এনেক্স ভবনে আমরা ৪০টি কক্ষ করেছিলাম। সেখানে ৩৫টি আদালত বসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এবারে আরো ৩২টি আদালত বসার সুযোগ হবে। অনেক আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

এর আগে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নবনির্মিত ১২ তলা ভবনের একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by