রংপুর

ধান কাটা-মাড়াইয়ে হারভেস্টার মেশিনের ব্যবহার বেড়েছে

  প্রতিনিধি ৮ মে ২০২৩ , ৮:২৫:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. হারুন-উর-রশীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) :

দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে বোরো ধান নিয়ে কৃষকের যে, সোঁনালী স্বপ্ন দেখছিলেন। এখন তা বাস্তবায়ন হতে শুরু করেছে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ বিঘা প্রতি ৩৩ থেকে ৩৫ মন ধানা পাওয়ায় ও হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে স্বল্প সময়, অল্প খরচে উপজেলার কৃষকেরা প্রত্যাশার চেয়েক বেশি পাওয়ায় খুশি প্রকাশ করেছেন তারা। অধিকাংশ কৃষকেই বলেছেন প্রতি শতকে ১ মণ করে ধান আবাদ হয়েছে। তাদের জীবনে এমন ধানের ফলন কোনদিনেই দেখেননি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সেই ফসল ঘরে তুলতেও পারছেন সহজে। বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ে প্রতি বছরে যে শ্রমিকের সংকট লক্ষ করা যেত, এবার তার ব্যাতিক্রম। এবার উপজেলায় সরকারী ও ব্যাক্তিগত ভাবে যে পরিমান ধান কাটা মাড়াই হারভেস্টার মেশিন কাজ করছে তা এর আগে ছিলোনা। হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই করলে সময় ও খরচ কম লাগছে সেকারণে প্রায় সব কৃষক তাদের ফসল কাটা ও মাড়াই হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করছেন। তাই এবছর শ্রমিকের তেমন একটা সংকট লক্ষ করা যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এবার অর্জন হয়েছে ১৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ১৭ মেট্টিক টন।
কৃষকেরা জানান, বোরো মৌসুমে প্রতিবছরে শ্রমিক সংকট থাকে। সেই সংকট মোকাবেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধানা কাটা শ্রমিকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের নিয়ে আসতে হতো। সেই শ্রমিক দিয়ে বোরো ধানা কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে প্রতি বিঘায় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হতো। বর্তমানে সেই চিত্র উল্ট। এবার হারভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি বিঘায় ধান কাটা হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়। উপজেলার সর্বত্রয় হারভেস্টার মেশিনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর শ্রমিক সংকট শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কৃষক কাঠ ফাটা রোদে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে বোরো ধানা ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে বোরো ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় ধান কাটা ও মাড়াই কাজের মধ্যে এক প্রকার উৎসবের আমেজ তৈরী হয়েছে।
উপজেলার বারোকোনা গ্রামের কৃষিক শুকরু আলী বলেন, গত বছরের ধান কাটা শ্রমিকের অভাবে ধান ঘরে তুলতে দেরি হয়। চড়া মূল্য দিয়েও তাদের পাওয়া যেত না। এবছর ধানের ফলনও বেশি আবার ধান কাটা ও মাড়াই হারভেস্টার মেশিনও বেশি তাই এবার আমাদের গ্রামের সবাই হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা ও মাড়া করেছি। এতে খরচ অনেক কম ও সময়ও কম লেগেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে কৃষক যাতে অল্প খরচে, স্বল্প সময়ে তাদের আবাদকৃত বোরো ধান ঘরে তুলতে পারে সেলক্ষ্যে উপজেলায় ভর্তুকিতে কৃষকদের মাঝে ২১০টি হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলা থেকেও হারভেস্টার মেশিন এসেছে। সেগুলো দিয়ে মাঠের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। বোরো ধানা কাটা ও মাড়াইয়ের প্রয়োজনে বর্তমানে ফুলবাড়ী উপজেলার কোথাও শ্রমিক সংকট নেই। এবছর শ্রমিক সংকট নিরসনের সরকারের নেওয়া নানামুখী পদক্ষেপের সুবিধা পেতে শুরু করেছে এই উপজেলার কৃষকেরা ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by