রংপুর

ফুলবাড়ীতে বিদ্যুতে ভর্তুকি পাচ্ছে না প্রান্তিক কৃষক

  প্রতিনিধি ২৯ মার্চ ২০২২ , ৯:১৯:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মোস্তাফিজার রহমান, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) :

বোরো মৌসুমে সেচের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পাশাপাশি কৃষিতে উৎপাদন ব্যয় কমাতে বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। সরকার বিদ্যুতে ভর্তুকি দিলেও কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে তার সুবিধা পাচ্ছেন শুধুমাত্র সেচ পাম্প মালিকরা। কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ফুলবাড়ী জোনাল অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় এবছর গভীর ৮৬টি ও ১৪৮০টি অগভীর নলকূপ মিলে মোট ১৫৬৬ টি সেচ সংযোগ চালু রয়েছে। আর প্রতিটি নলকূপের মালিক বিদ্যুতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি পাচ্ছেন এবং সেটা প্রতিটি বিলের সাথে আমরা সমন্বয় করে দিয়ে থাকি।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, চলতি বোরো মৌসুমের প্রতি বিঘা জমিতে সেচের কৃষকদের গুনতে হচ্ছে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। কৃষকদের দাবি বিদ্যুতে ভর্তুকি পাম্প মালিকরা পেলেও নুন্যতম সুবিধাও তারা পাচ্ছেন না। উপজেলার উত্তর বড়ভিটা গ্রামের এক কৃষক বলেন, আমি এবারে ৩ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি প্রতি বিঘা জমিতে সেচ দেয়ার জন্য আমাকে ২ হাজার করে টাকা দিতে হচ্ছে।

চন্দ্র খানা গ্রামের আনোয়ারুল জানান, আমি বেশ কিছু দিন থেকে দুই থেকে আড়াই বিঘা জমিতে ধান রোপণ করে আসছি। ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা করে মটার ভারা দিয়ে আসছি, কিন্তু সরকার যে বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছে তা তো আমরা পাচ্ছি না। যদি সরাসরি আমাদেরকে ভর্তুকি দেয়া হত তাহলে আমাদের মত প্রান্তিক কৃষকের বেশি উপকার হত। সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, হাসান আলী ও সিরাজ আলী বলেন, বিদ্যুতে সরকারের দেয়া ভর্তুকির সুবিধা পাম্প মালিকেরাই পাচ্ছেন। ভর্তুকি পাওয়ার পরেও আমাদের তারা কোন ছাড় দিচ্ছেন না। সরকার যে বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছে তাতে আমাদের লাভ কি?

এ বিষয়ে এক সেচ মালিক বাদল সরকার বলেন, আমি বিঘা প্রতি ১৮শ’ থেকে দুই হাজার টাকা করে মটর ভাড়া নিচ্ছি। বিদ্যুত অফিস থেকে যদি কোন নির্ধারিত ভাড়া ঠিক কর তাহলে আমি সেটাই গ্রহণ করবো।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, উপজেলায় এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক ১০ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে বেশির ভাগ কৃষক বিদ্যুৎ চালিত গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে জমিতে সেচ দিচ্ছেন। এ উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের বিদ্যুতে ভর্তুকির সুবিধা দিতে আমরা সেচ চার্জ নির্দিষ্ট করার বিষয়ে কাজ করছি। উপজেলায় সেচ কমিটি আছে তাদের সাথে আলোচনা করে সব কৃষকই যাতে বিদ্যুতের ভর্তুকি সুবিধা পায় সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস বলেন, সেচের জন্য সরকার প্রদত্ত সুবিধা প্রান্তিক কৃষকদের জন্য নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অঞ্চল ভিত্তিক সেচের জন্য নির্দিষ্ট চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আমরা পর্যালোচনা করছি। কৃষকদের উপস্থিতিতে মিটিং করে সেচ চার্জ ঘোষণা করার প্রক্রিয়া চলমান আছে। প্রান্তিক কৃষকরা যাতে প্রদত্ত সুবিধার বিষয়ে অনিশ্চিত না থাকে সেজন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by