বরিশাল

বাউফলে চিকিৎসক নার্স টেকনিশিয়ান ছাড়াই চলছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার

  প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২১ , ৮:০৩:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ

পটুয়াখালীর বাউফলে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান ছাড়াই চলছে ৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ১৮টি ডায়াগনোস্টিক সেন্টার। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ ভাবে এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার চললেও রহস্যজনক কারনে এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাহেদা গফুর, স্নোব বাংলাদেশ, সেবা, নিউ হেলথ কেয়ার, লাইফ কেয়ার ও মাজেদা নামের ৬টি হাসপাতাল এবং পৌর শহরের কথামনি, ইসেব, পলি, জাবির, গ্রীণ ল্যাব, কালাইয়া বন্দরে নুহা, কালিশুরী বন্দরে মেডিকেয়ার ও ফেয়ার মেডিকেল সার্ভিসেস এ্যান্ড ল্যাব, বগা বন্দরে আপন ও বগা ডায়াগনোস্টিক, কাছিপাড়া বাজারের ল্যাব এশিয়া ও কাছিপাড়া ডায়াগনোস্টিক, কনকদিয়া প্যাথলজি, নওমালা নগরের হাট বাজারে গ্রামীন কল্যাণ ও নগরের হাট ডায়াগনোস্টিক, নুরাইনপুর নিউ লাইফ কেয়ার, আদাবাড়িয়া নিউ কাশিপুর, তাসিম ও গ্রামীন কল্যাণ ডায়াগনোস্টিক সেন্টার থাকলেও একটিতেও সরকারি নিয়ম নীতিমালা অনুসরণ করা হয় না। বিধি অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালের জন্য ১জন সার্জন, ৩ জন এমবিবিএস ও ১জন অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক, বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিলের অনুমোদিত ৬ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট, পোস্ট অপারেটিভ রুম, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লাইসেন্স থাকার কথা থাকলেও ৬টি হাসপাতালের কোনটিতে তা নেই।

সার্জন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই সিজার করা হচ্ছে প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে। এছাড়াও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে একজন ল্যাব টেকনেশিয়ান, একজন এক্সরে টেকনেশিয়ান, একজন প্যাথলোজিস্ট, একজন রিপোর্ট প্রদানকারী চিকিৎসক ও একজন রেডিওগ্রাফার থাকার কথা থাকলেও তা একটিতেও নেই। এসব হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে চলছে চরম নৈরাজ্য। কোন জবাবদিহিতা নেই।

তবে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা দাবী করেন, সঠিক নিয়মেই চলছে তাদের প্রতিষ্ঠান। বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি সূত্র জানায়, প্রতিনিয়ত সরকারি সেবার জন্য বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে কতিপয় দালাল বিভ্রান্ত করে প্রসুতি নারীদের সেবা ও হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে যান। বিনিময়ে প্রত্যেক দালালকে ১ হাজার টাকা বকশিশ দেয়া হয়। তাই বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অত্যাধুনিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রসুতি নারীরা।

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমরা বাউফলের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোর তালিকা তৈরি করেছি। বিধি বহির্ভূতভাবে পরিচালিত হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Powered by