আন্তর্জাতিক

বিজয় উদযাপনে ফাঁকা গুলি, কাবুলে নিহত ১৭

  প্রতিনিধি ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৫:৩১:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি সেনারা চলে গেছে গত ৩০ আগস্ট মধ্যরাতে। এটা জানার পর থেকে বিজয় উদযাপন শুরু করেছে তালেবান ও তাদের সমর্থকরা। মূলত ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিজয় উদযাপন করা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার তাদের ছোড়া এমন ফাঁকা গুলিতে অন্তত ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৪১ জন। খবর আল-জাজিরার।

শুক্রবার স্থানীয় সময় আনুমানিক রাত ৯টার দিকে ফাঁকা গুলিতে ছেয়ে যায় কাবুলের আকাশ। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহীদের হাত থেকে তালেবান পাঞ্জশির উপত্যকার দখল নিয়েছে, এমনটা শোনার পর ফাঁকা গুলি ছুড়ে উদযাপন শুরু হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। তবে তালেবানবিরোধী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) বলছে, পাঞ্জশিরের পতন হয়নি।

আল-জাজিরা বলছে, এর মূল কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ফাঁকা গুলি ও তাতে অর্ধশতাধিক মানুষের হতাহত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তালেবানও এখনো এর কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয়নি। তবে তালেবানের মুখপাত্র কড়া ভাষায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

তবে তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ তার টুইটার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় আকাশে ফাঁকা গুলি ছোড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বলেছেন, ‌মানুষ যেন বাতাসে গুলি চালানোর পরিবর্তে ‘ আল্লাহর শুকরিয়া’ আদায় করেন।

গুলি ছোড়ার ঘটনায় জড়িতদের তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘আকাশে গুলি ছোড়া বাদ দিয়ে বরং আল্লাহকে ধন্যবাদ দাও। বুলেটে বেসামরিকদের ক্ষতি হতে পারে, প্রয়োজন ছাড়া কেউ কোনো গুলি করবেন না।’

কাবুল থেকে পূর্বদিকের নানগারহার প্রদেশেও একইরকমভাবে ‘উল্লাসে গুলি ছোড়ার’ ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়েছেন। ওই প্রদেশটির রাজধানী জালালাবাদের একটি এলাকার এক হাসপাতালের মুখপাত্র গুলজাদা সানগার এমনটাই জানিয়েছেন।

পাঞ্জশিরে চলছে তুমুল লড়াই

বিবিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকায় তালেবানের সঙ্গে আহমেদ মাসুদ নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল লড়াই চলছে। উভয়পক্ষের দাবি, গত কয়েক দিনের ওই লড়াইয়ে একে অপরের বহু যোদ্ধাকে হতাহত করেছে তারা।

কয়েকটি এলাকা দখলের দাবি করে তালেবান বলেছে, ন্যাশনাল রেজিট্যান্স ফ্রন্টের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ফ্রন্টের দাবি, পাঞ্জশির তাদের দখলে আছে। সব প্রবেশদ্বার তারা রক্ষা করতে পেরেছে। তালেবান কয়েকশ যোদ্ধাকে হারিয়েছে।

তালেবানের মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‌তাদের যোদ্ধারা পাঞ্জশিরে প্রবেশ করে কিছু ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ‌‘স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর আমরা অভিযান শুরু করেছি। তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

কিন্তু ন্যাশনাল রেজিট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, পাঞ্জশিরের সব গিরিপথ ও প্রবেশপথ তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে এবং উপত্যকার প্রবেশমুখের জেলা শোতুল দখলের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে তালেবানকে হটিয়ে দিয়েছে তারা।

পুরো আফগানিস্তানে শুধু পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালেবান। সাবেক আফগান সেনা ও স্থানীয় কয়েক হাজার মিলিশিয়া তালেবানের সঙ্গে লড়াই করছে। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ’র অনুগত বাহিনীও এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by