রাজশাহী

ভাঙ্গুড়ায় প্রভাবশালীদের দখলে যাচ্ছে গুমানি নদী!

  প্রতিনিধি ১০ মে ২০২১ , ৭:২৩:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

মো.ময়নুল হক, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) :

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দখল হয়ে যাচ্ছে চলনবিল এলাকার ঐতিহ্যবাহি গুমানি নদী। এক সময়ের নদী বন্দর নামে খ্যাত উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের পাশে হরিহর পুর এলাকায় গুমানি নদী দখলের এমন চিত্র দেখা গেছে।

নদী দখল করে নির্মাণ করে চলেছেন প্রভাবশালী মহল বহুতল ভবন ও পাকা স্থাপনা। দখলদাররা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। আবার স্থানীয় ভূমি অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও তাদের এই কর্মকান্ড দেখেও কিছু না বলে রহস্যজনক কারণে রয়েছে চুপচাপ। তাদের এই নিরব ভূমিকার কারণে বেদখল হয়ে যাচ্ছে সরকারি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। তবে নদী দখল করে নির্মিত ভবনের একাধিক মালিকরা জানান, নদীর ধারে নির্মিত ভবন সরকার চাইলে তারা ভেঙে ফেলবেন।

সরেজমিনে উপজেলার অষ্টমনিষার ইউনিয়নের অষ্টমনিষা বাজার সংলগ্ন হরিপুর গুমানি নদীর তীর এলাকার গিয়ে দেখা যায়, ‘দ্বীপ চাল কল’ ও ‘বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেড’ নামের দুইটি প্রতিষ্ঠানের গুমানি নদী দখল করে একাধিক বড় বড় ভবন নির্মাণ করেছেন। সেখানে বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেডের একাধিক বহুতল ভবন নদীর মধ্যে কলাম করে নির্মাণ কাজ চলমান আছে। অন্যদিকে গুমানি নদীর মাটি দিয়েই ওই স্থাপনার পাশ ভরাট করার চিত্র দেখা গেছে। অনুরুপভাবে দ্বীপ চাল কাল এ একই ভাবে নদী দখল করে আরসিসি কলাম করে ভবন নির্মাণ করেছে। অপরদিকে নদীর মাটি কেটেই তা রক্ষা করতে আরও নদী দখল করা হয়েছে। ফলে চলনবিল অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহি গুমানি নদী দখল হয়ে তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হুমকির মুখে রয়েছে। এভাবে গুমানি নদী দখল হতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে চলনবিলাঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি কৃষি জমির পানি দ্রæত নিষ্কাশনে বাধার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির একাধিক সদস্য।

দ্বীপ চাউল কলের সত্বাধিকারী স্বপন সরকার মুক্তি জানান, নদীর ৮/১০ ফুট জায়গা বালি ফেলে ভরাট করা হয়েছে বটে কিন্তু ওই ভরাটকৃত জায়গা নদীতে ভেঙে যাওয়া তার নিজের জমিরই অংশ। তবে সরকার চাইলে তিনি তার নদী দখল করে নির্মিত ভবন ভেঙে দিতেও রাজি আছেন বলেও জানান তিনি।

বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী প্রার্থ প্রতীম সাহা জানান, এবিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী নন।

এব্যাপারে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি সহকারি কর্মকর্তা মুরারি মোহন জানান, তিনি অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদানের পূর্বেই তারা তাদের ভবনগুলি নির্মাণ করেছেন।

বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এসএম মিজানুর রহমান বলেন, নদী দখল করার এখতিয়ার কারো নেই। যারা দখল করবে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবিও জানান তিনি।

উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by