ঢাকা

মনোহরদীতে ট্রে পদ্ধতিতে বীজতলা

  প্রতিনিধি ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ , ৬:১১:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

 

মো. রেজাউর রহমান রেজা, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি:

নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রথমবারের মতো কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে ধান চাষ শুরু হয়েছে। পৌর এলাকার হাররদিয়া মাঠে এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে।

ইতোমধ্যে ট্রে পদ্ধতিতে বীজতলা ও চারা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ পদ্ধতি অবলম্বনে চাষিরা লাভবান হবেন বলে আশা কৃষি বিভাগের। বোরোর বীজতলা ট্রে পদ্ধতিতে করলে কুয়াশা বা শৈত্যপ্রবাহে নষ্ট হবে না। এই পদ্ধতির চারাগুলো সুস্থ ও সবল হবে। এতে চাষে ফলন বেশি পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা কিশোরগঞ্জ সড়কের ফায়ার সার্ভিস কার্যালয় সংলগ্ন হাররদিয়া মাঠের ১৫০ বিঘা জমিতে হাইব্রিড টিয়া জাতের এ ধান চাষ করা হবে।

এ কারণে হাররদিয়া মাঠে ৪ হাজার ৫০০টি ট্রেতে ৪৯৫ কেজি বীজ বপণ করে চারা তৈরি করা হয়েছে। এবার ট্রেতে বীজতলা, যন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণ ও কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটাও হবে। অর্থাৎ এবার আধুনিক পদ্ধতিতেই কৃষি কাজ সম্পন্ন হবে। এ পদ্ধতিতে চাষিরা কম খরচে তাদের ধান ঘরে তুলতে পারবেন।

 

আধুনিক পদ্ধতিতে এই প্রথমবার বীজতলা ও চারা তৈরির কাজে সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন পৌরসভা বøকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ চদ্র পাল। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে যেভাবে ফসলি জমি কমতে শুরু করেছে, এমতাবস্থায় ট্রে পদ্ধতির ব্যবহার খুবই সময়োপযোগী। এই পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারে ট্রেতে চারা উৎপাদনের ফলে ধানের উৎপাদন খরচ কমানো, শ্রমিক সংকট নিরসন ও সময় সাশ্রয় সম্ভব।

 

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র পাল জানান, ট্রের ওপর পরিমাণ মতো জৈব সার ব্যবহার করা হয়। পরে তা ২৫ থেকে ৩০ দিন পর মাদুরের মতো করে তোলা হয়। এরপর রোপণ যন্ত্র রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে মাঠে রোপন করা হয়। এ পদ্ধতিতে দুইজন শ্রমিক একটি মেশিন দিয়ে দিনে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপন করতে পারেন। ট্রে পদ্ধতিতে চারা টেনে তুলতে হয় না, তাই চারার শিকড় ছিড়ে না।

ফলে শিকড় দ্রুত মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছ সবল হয়ে বেড়ে ওঠে। তিনি আরো জানান, অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তি কৃষকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে তা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন অনেকে।

এই পদ্ধতিতে সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ধান চাষে ফলন বাড়ে ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ। এ পদ্ধতি জনপ্রিয় করা গেলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চাল রপ্তানির ক্ষেত্রেও দারুণ অগ্রগতি হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আয়েশা আক্তার জানান, সনাতন পদ্ধতিতে চারা রোপণ করলে ৩৫ থেকে ৪০ দিনের চারা রোপন করতে হয়। সনাতন পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ট্রেতে বীজ বপন করতে মাটি জৈব সার মিশ্রণ দিয়ে বীজতলা তৈরি করা হয়।

এরপর বীজ ছিটিয়ে পূনরায় জৈব সার দিয়ে সমতল জায়গায় রেখে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা হয়। বীজতলা তৈরির ৩ দিনের মধ্যে অঙ্কুর বের হয়ে যায়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা উৎপাদন করে রোপণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে কৃষক ভালো মানের চারা উৎপাদন করে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক জমিতে ফসল ফলাতে পারেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by