রাজশাহী

যমুনার চরে বাদামের বাম্পার ফলনকৃষকদের মুখে হাসি

  প্রতিনিধি ১ জুন ২০২৩ , ৮:৫১:০২ প্রিন্ট সংস্করণ


বাবুল আকতার খান, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) :

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ যমুনার চরের কৃষকেরা বাদাম চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এমন ফলন হয়েছে বলে কৃষকরা মনে করেন। যমুনা চরের মাটিতে তিল, কাউনের চাইতে বাদাম চাষে ঝুঁকি কম। আর কম খরচে অধিক ফলন হওয়ায় চরের বালুমাটিতে বাদাম চাষের পরিমান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার যমুনা চরের গালা, সোনাতনি, কৈজুরী ইউনিয়ন ছাড়াও বড়াল নদীর তীরবর্তী রুপবাটি ও পোতাজিয়া ইউনিয়নের চরে চিনা বাদাম চাষ ভাল হচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর (২৮৫০ বিঘা) জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। বাজার মূল্য ভালো থাকায় চাষিরা তাদের উৎপাদিত বাদাম বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। জানা যায়, প্রতি বছর শাহজাদপুর উপজেলার গালা, সোনাতনী ও কৈজুরী ইউনিয়নের যমুনা নদীর জেগে উঠা চরে কৃষক বাদাম চাষ করে থাকেন। যমুনা নদীর বড় চামতারা, ছোট চামতারা, কুরশী, বারো পাখিয়া, বাঙালা, রতনদিয়া, জগতলার চর, হাতকোরা, ভেড়াখোলা, বিনোটিয়ার চরে ব্যাপকহারে বাদামের চাষ হয়। এছাড়াও নদীর তীরবর্তী পশ্চিমপাড়ে আরো কিছু সংখ্যক জমিতে এ চাষ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। চরের মাটি বেলে দো-আঁশ, অধিক তাপমাত্রা ও মাঝারি বৃষ্টিতে দেশীয় জাতের ও চিনা বাদামের ব্যাপক ফলন হয়। কৃষকরা সাধারনত এই দুই জাতের বাদামের চাষ করেই লাভবান হতে পারেন। এর চাষে খরচ কম লাগে ও সামান্য সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হলেও নিড়ানি দেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন হয় না। অল্প দিনেই এর ভাল ফলন পেয়ে এবং উৎপাদিত বাদাম বাজারে ভালো দামে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
বেনুটিয়া গ্রামের বাদাম চাষি বাচ্চু মিয়া জানান, আমি চলতি মৌসুমে ১বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরুপ ফলন পেয়েছি। এবছর বাদামের বাজার দর ভালো। বর্তমানে শুকনো বাদাম প্রতিমণ ৪ হাজার থেকে ৪৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট চামতারা গ্রামের বাদাম চাষি রহমত আলী বলেন, এবছর আমি ২ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছি। বিঘায় ১০/১২ মণ ফলন পেয়েছি। অন্যান্য ফসলের তুলানায় বাদামে লাভ বেশি। তাই প্রতি বছরই আমি বাদাম চাষ করে থাকি। আগামী বছরে আরও বেশি জমিতে বাদাম চাষ করবো। শাহজাদপুর কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর যমুনার চরের কৃষকরা বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১৩ মণ বাদামের ফলন পেয়েছেন। চরাঞ্চলের মাটি বাদাম চাষের উপযোগী হওয়ায় এর চাষ আরো বৃদ্ধি করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের চাষের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে।
সদ্য বদলি হওয়া শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুস সালাম ও উপ সহকারী কৃষি অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, যমুনা চরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকহারে বাদাম চাষ করেছে কৃষকরা। আমরা যমুনা চরের কৃষকদের মাঝে বিনাম‚ল্যে সার ও ঢাকা-১, ঢাকা-৪ বাড়ী চিনা বাদাম বিতরণ করেছি। এর চাষে কৃষকরা বেশি ফলন পাচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের নানা প্রকার পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by