প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২৩ , ৮:৩২:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
ভোরের দর্পণ ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত না দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরিপক্ক সম্পর্ক রয়েছে। তবে অন্যান্য যেকোনো সম্পর্কের মতো এখানেও কিছু অস্বস্তিকর উপাদান রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় অস্বস্তিকর হচ্ছে— বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত না দেওয়া। এর সমাধান হচ্ছে খুনিকে ফেরত পাঠানো।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘যদি সত্যি কথা বলি— সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। কানাডাতেও বঙ্গবন্ধুর আরেকজন খুনি আছে, কিন্তু সেখানকার বিষয়টি ভিন্ন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফেরত না পাঠানোর বিষয়ে তাদের একটি আইন আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সেরকম কোনো আইন নেই।’
বাংলাদেশ কোনো বিদেশি চাপ দ্বারা প্রভাবিত হয় না বলে দাবি করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কোনো বিদেশি শক্তির চাপে শেখ হাসিনা প্রভাবিত হন না। যদি বিদেশি চাপ প্রয়োগ করাও হয়, তাহলেও কি শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফেলা যাবে?’
আরও পড়ুন: কোনো বিদেশি শক্তি শেখ হাসিনাকে সরাতে পারবে না: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের নির্বাচন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসানীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ওই নীতির যথেচ্ছ ব্যবহার হবে না। ভিসানীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার বিষয়টি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবে কি না, এ বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘২০২১ সালের পর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। আমি কোনো কারণ দেখি না, যার কারণে সামনের বছরগুলোতে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। অবশ্য যদি না আমরা বড় ধরনের কোনও কাণ্ড ঘটাই।’
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের উদ্যোগের বিষয়ে এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আমরা রাজনৈতিকভাবে যোগাযোগ করছি। ২০২১ সালের পর পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে। এছাড়া আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, যেটি আমরা অনুসরণ করব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধাদানকারীদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে শাহরিয়ার আলম বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব দলের সমভাবে প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে। অবশ্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব বেশি। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে সবার দায়িত্ব সমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি বলছে, পুলিশ, প্রশাসন এবং যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত, তাদেরকে দেখে নেওয়া হবে এবং এটি বড় ধরনের হুমকি। আমি আশা করব, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি বিবেচনা করবে।’
বিএনপির দাবি করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়টি শেষ হয়ে গেছে। আমরা সেটিতে ফিরে যাব না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি করাটা এখন হবে অবৈধ এবং এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে বিবেচিত হবে।’