ধর্ম

যে কারণে জাযাকাল্লাহ বলবেন

  প্রতিনিধি ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ , ৪:০৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

কেউ উপকার করলে, তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা— ইসলামের শিক্ষা। কৃতজ্ঞতা মুমিনের ভূষণ ও সৌন্দর্যও ‍বটে। মহান আল্লাহ অকৃতজ্ঞদের পছন্দ করেন না। এ কারণেই রাসুল (সা.) উম্মতকে কৃতজ্ঞতা আদায়ে উৎসাহ দিয়েছেন। কারও দ্বারা উপকৃত হলে তার উপকার করার প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছেন। কমপক্ষে উপকারীর জন্য দোয়া করার শিক্ষা দিয়েছেন।

যারা অকৃতজ্ঞ, তাদের প্রতি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।’ অথবা ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, সে আল্লাহর প্রতিও অকৃতজ্ঞ।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১১)

মানুষকে প্রতিদান দেওয়ার নির্দেশ

কেউ কোনো উপকার করলে, তাকে প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। সম্ভব না হলে অন্তত তার জন্য দোয়া করা চাই। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তোমাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেওয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দোয়া করতে থাকো, যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছ। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৭২)

 

উত্তম প্রতিদান দিতে পবিত্র কোরআনেও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘উত্তম কাজের (ইহসানের) প্রতিদান উত্তম পুরস্কার (ইহসান) ছাড়া কী হতে পারে?’ (সুরা আর রহমান, আয়াত : ৬০)

উপকারীর সঙ্গে উত্তম ব্যবহার

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কারও মাধ্যমে উপকৃত হলে— তাকে পুরস্কৃত করা ও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা জরুরি। আর যদি তার উপকার করার কিংবা প্রতিদান দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে অন্তত তার কল্যাণের জন্য দোয়া করা।

উসামা ইবনে জায়দ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘কাউকে অনুগ্রহ করা হলে— সে যদি অনুগ্রহকারীকে বলে, ‘জাজাকাল্লাহু খাইরান’ (আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন), তাহলে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৫)

উপকারকারীরর প্রতি অনেকে অনেকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আমাদের সমাজে নানা নিয়ম ও প্রথা প্রচলিত আছে। কেউ ‘ধন্যবাদ’ বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আবার কেউ কেউ ইংরেজিতে ‘থ্যাংক ইউ’ বলে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। এতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পায় ঠিক— তবে উপকারকারীর জন্য দোয়া হয় না। অথচ আল্লাহর রাসুল (সা.) উপকারকারীর জন্য দোয়া করতেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাহলে কৃতজ্ঞতাও আদায় হয়, পাশাপাশি তার জন্য কল্যাণের দোয়াও করা হয়।

তাই উপকারী, সাহায্যকারী কিংবা সুন্দর আচরণকারী যে কারও সাথে বিনম্র আচরণ করা উচিত। পাশাপাশি আল্লাহ রাসুল (সা.)-এর শেখানো দোয়া ‘জাজাকাল্লাহ’ বলা উচিত। এতে একদিকে কৃতজ্ঞতা আদায় হবে, অন্যদিকে নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতাও বাড়বে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by