দেশজুড়ে

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ

  প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২১ , ৮:০৯:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্গাপুর (রাজশাহী) :

রাজশাহীর দুর্গাপুরে এবার প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ১৫০বিঘা জমিতে এই ফুলের আবাদ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কৃষককের মাঝে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় দুর্গাপুরে প্রথমবারের মত আবাদ হচ্ছে সূর্যমুখী। উপজেলার ১৫০ বিঘা জমিতে ১৫০ জন কৃষক কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় ফুলটির আবাদ শুরু করেছেন। উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, দেশে ভোজ্য তেলের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে।

প্রতিবছর ১৪ থেকে ২০ লক্ষ মেট্রিকটন ভোজ্য তেল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। যে কারণে আমাদের দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। সরকার সেটি নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে।

প্যাসিফিক হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। ৩৫ জন কৃষককে বীজসহ আন্তঃপরিচর্যা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে কৃষি বিভাগ প্রতিনিয়তই প্লটগুলো পর্যবেক্ষণ করছে। ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকরা এবার প্রতি বিঘায় অন্তত ৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।

এদিকে, গত সপ্তাহে দুর্গাপুর পৌর এলাকার সিংগা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনের সূর্যমুখীর ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান। কৃষক আনোয়ারের সূর্যমুর্খী ক্ষেত ঘুরে সন্তোষ প্রকাশ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ কর্মকর্তা সবুজ আলী, ফরিদ হোসাইন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমানসহ আরও অনেকে।

দুর্গাপুর পৌর এলাকার সিংগা গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, আগে তিনি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি প্রথমবারের মতো প্যাসিফিক হাইসিন-৩৩ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী করতে তার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। ইতোমধ্যেই প্রতিটি গাছে ফুল ধরেছে। প্রথমবারেই সূর্যমুখী চাষে সফলতা ও লাভের আশা করছেন তিনি।

তিনি আরও জানান, সূর্যমুখীর কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ও বিক্রি করা যাবে। যা থেকে বাড়তি একটা লাভ মিলবে। তাছাড়া এটি চাষে তেমন কোনো ঝামেলা নেই। মাত্র দুটি সেচ দিলে এবং ফুলগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করলেই হলো। উপজেলার শ্রীপুর এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল জানান, ধান-পাট চাষে প্রচুর পরিশ্রম এবং খরচ হয় কিন্তু সূর্যমুখী চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। যে কারণে আগামীতে অনেক কৃষকই সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মসিউর রহমান জানান, ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষে এ বছর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় একটি পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাইসিন-৩৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় তাতে কোনো ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতে সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলচাষে অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by