রংপুর

স্বপ্নের ধানে রোগ, দিশেহারা লালমনিরহাটের কৃষক

  প্রতিনিধি ২৬ এপ্রিল ২০২১ , ৫:৩৫:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

লালমনিরহাটে কৃষকের স্বপ্নের বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। ধান ঘরে তুলতে প্রস্তুত এখানকার কৃষাণ-কৃষাণীরা। কিন্তু আশাবাদী ফলনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘নেক ব্লাষ্ট’ নামের ধানের একটি রোগ। কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো লাভ না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাকতে শুরু হওয়া জেলার অধিকাংশ এলাকার ধানক্ষেতগুলোতে আক্রমণ করেছে ‘নেক ব্লাষ্ট’’। এ রোগের প্রভাবে ক্ষেতের ধানের শীষ আস্তে-আস্তে সাদা হয়ে ধান চিটায় পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করেও ‘নেক ব্লাষ্ট’’ থেকে প্রতিকার পাচ্ছেন না কৃষকরা।

জেলার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক জমির বোরো ধানের শিষ সাদা হয়ে গেছে। শীষের গোড়ায় প্রথমে এ রোগ দেখা দিয়ে ক্রমান্বয়ে তা পুরো শীষকে গ্রাস করে ফেলেছে। এ অবস্থায় কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আগামী দু-সপ্তাহের মধ্যে জেলার অধিকাংশ এলাকার পাকা বোরো ধান কাটতে পারার উপযোগি হলেও ‘নেক বøাস্ট’ সংক্রমণ হওয়ায় ভালো ফলন নিয়ে শঙ্কা তাদের।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট এলাকার কৃষক আব্দুল মোতালেব বলেন, আমার ক্ষেতের ধান প্রায় পেকে গেছে। ধানের গাছ দেখে ভালো ফলনও হবে মনে হয়। কিন্তু ক্ষেতের কিছু অংশে ‘নেক ব্লাষ্ট’’ সংক্রমণ হওয়ায় চিন্তায় আছি।

আদিতমারি উপজেলার দৈলজোর এলাকার কৃষক জয়নুল আবেদীন বলেন, আমার ক্ষেতের ধান খুব ভালো হয়েছিল। হঠাৎ ‘নেক ব্লাষ্ট’’ ধরে ক্ষেতের অনেক অংশের ধান চিটায় পরিণত হয়েছে। কয়েক প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেও ভালো ফল পাচ্ছি না।

কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের পাটোয়াটারী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, এবারে ২৮ ধান রোপণ করে মাথায় হাত পড়ছে। ২৮ ধান যে লাগিয়েছে তার সম্পূর্ণ ধান ‘নেক ব্লাষ্ট’’ সংক্রমণ হয়ে ধান চিটায় পরিণত হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামীম আশরাফ বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। জেলায় চাষাবাদ হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৪৫০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চাষাবাদকৃত ধানে ‘নেক বøাস্ট‘ সংক্রমণ হয়েছে ৬.৯ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ব্যবহার করে ৪.৫ হেক্টর জমির সেটি দমন করা হয়েছে। ‘নেক ব্লাষ্ট’’ সংক্রমণ ঠেকাতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

Powered by