উপ-সম্পাদকীয়

রাজ্য নয়, বিশ্বশক্তি লড়াই করবে ক্ষুধার বিরুদ্ধে!

  প্রতিনিধি ৩ মে ২০২০ , ৮:১৯:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মো. খবির উদ্দিন : তামাম দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত প্রতিটা রাজধানী, প্রতিটা শহর, প্রতিটা রাজপথÑ যেখানে মানুষের কোলাহল রাত পেরিয়ে গেলেও থামানো যেতো না, শ্রোতের মত মানুষ ছুটে চলত নিজ গন্তব্যে, ছিল বাধাহীন বিচরণ। কোথায় যেন হারিয়ে গেছে! সবকিছু থমকে গেছে। অচেনা এক পৃথিবী। অচেনা এই পরিবেশ। আপনজন আপনজনকে এড়িয়ে চলছে। বাবার লাশ নিচ্ছে না সন্তান। ভাইয়ের পাশে নেই ভাই। ফোন দিলেও আসছে না লাশের পাশে। হৃদয় বিদারক এই দৃশ্য আর কতদিন! বড় কষ্ট হচ্ছে সমাজবদ্ধ মানব সম্প্রদায়ের। এই বন্দিদশা আর কতদিন! নেই কোন সীমারেখা। পৃথিবীর সাজানো গোছানো সব কিছু যেন তছনছ হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবী অনুমান করতে পারছে না কোথায় যাচ্ছে। এটা কোন যুদ্ধ নয়! এটা কোন বিশ^যুদ্ধও নয়! এটা এক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই। এই লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কোন শক্তি মানুষের কাছে নেই। এই অদৃশ্য ভয়ঙ্কর শক্তি যাকে আমরা করোনা বা কোভিড-১৯ নামে আখ্যা দিয়ে থাকি। করোনা বিশ^ অর্থনীতিতে এক ভয়ঙ্কর সর্বনাশ ডেকে আনবে বলে সংশয় প্রকাশ করছেন বিশ^ অর্থনীতিবিদগণ।  

বিশ্ব বোদ্ধা মহলের প্রাক অ্যাজাম্পশন কোন কাজে আসছে না। সত্যিকারের গাণিতিক হিসাব এখনও নয়। ক্ষতির হিসাব মিলানোর সময় এখনও আসেনি। অপেক্ষা করতে হবে বহুদিন। জিরো পজিশনে আসার আগ পর্যন্ত কোন দেশই নিরাপদ নয়। যেহেতু ভাইরাসটি খুবই রহস্যময়। একাধিক রূপে মানব দেহে ঢুকে পড়ছে। করোনা শক্তিশালী প্রতিটা স¤্রাজ্যের ভীত নড়বড়ে করে দিয়েছে। পৃথিবীর প্রথম শ্রেণির ক্ষমতাধর আজ নাস্তানাবুদ। ট্রাম্প প্রশাসন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। চীন তার জিডিপি গত ষাট বছরের মধ্যে সর্বনি¤েœ নেমেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই মহামারির শেষ কোথায়। কারো জানা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেরেয়াসুস গত ২০.০৪.২০২০ইং তারিখে সুইজাল্যান্ডের জেনেবায় এক বক্তব্যে বলেন আমাদের বিশ্বাস করুন চরম বিপর্যয় আসা এখনও বাকি। আপনারা ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লুর ইতিহাস দেখুন। 

বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ ২০২০ থেকে করোনা আক্রান্ত। অভিযোগ রয়েছে আমাদের প্রবাসী ভাইদের মাধ্যমে আমরা আক্রান্ত হয়েছি। প্রথম দিকে আক্রান্তের অবস্থা অনেকটা ধীর গতি থাকলেও এখন এর তেজীভাবে আমরা অনেকটা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি। এই আক্রান্তের শেষ সীমানা কোথায় এটা বলা মুশকিল। এই অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকা আল্লাহর দয়া ছাড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। গত ১৮.০৪.২০২০ইং তারিখে ৮৬ মিনিটের সংসদ অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঘরে থাকতে বলেছেন এবং আল্লাহকে ডাকতে বলেছেন। এই মুহূর্তে এর চেয়ে আর খাঁটি কথা কিছুই হতে পারে না। আমরা ঘরে বসে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব। আল্লাহর কাছে আত্মসমার্পন করলে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্তরের জনগণের জন্য এক লক্ষকোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এই মুহূর্তে এটা খুবই কার্যকরী পদক্ষেপ। বিষয়টি খুবই মানবিক। সে জন্য গোটা দেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানায়। তবে এই প্রণোদনার যথার্থ বন্টন আমরা সকলেই প্রত্যাশা করি। আশাকরি এই প্রণোদনায় কোন অশুভ হাত পড়বে না। 

সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বিশ্বনেতা কূটনৈতিক এবং ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা জানান যে, তারা নবযুগ সৃষ্টিকারী এক সময়ে জীবন যাপন করছেন। প্রতিদিনের লড়াইয়ের সাথে তাদের এক চোখ রাখতে হচ্ছে আর আরেক চোখ রাখতে হচ্ছে বিশ্ব সংকট মোকাবিলার দায়িত্বের দিকে। ফ্রান্সে মাখোঁ যেমন পূর্বাভাস দিয়েছেন, ‘এ সময়টা আমাদের অনেক কিছু শিখাবে। অনেক দৃঢ় বিশ্বাসে চির ধরবে এবং প্রত্যয় নড়বড়ে হয়ে যাবে। অসম্ভব বলে মনে করা অনেক কিছু ঘটবে পরদিন আমরা যখন জিতব, আগেরদিনটি আর ফিরে আসবে না। আমরা নৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী হব। আমরা পরিণতিগুলো ঠিকঠাক মতো ধরতে পারব।’ তিনি স্বাস্থ্যখাতে বড় বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

আমেরিকার পার্লামেন্টে কোরআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট শুরু করেছেন ডোনান্ড ট্রাম্প। মি. ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে অনেক বিতর্কিত সিন্ধান্ত দিয়েছেন। তার এই বিতর্কিত সিন্ধান্তে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মুসলিম সম্প্রদায়। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো ইসরাইলের সৈন্যদের কাছে ফিলিস্তিনিদের অসহায় করে দিয়েছে। জেরুজালেমের সাথে তামাশা করেছেন ট্রাম্প। পরস্পরের সংঘাতকে আরও উস্কে দিয়েছে ট্রাম্প। ফিলিস্তিন ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে মুসলিম অধিবাসী আমেরিকায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতাকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখেনা ট্রাম্প মুসলমানদের সাথে অনেকটা ছেলে খেলা করেছেন। হয়ত কৃতকর্মের অনুশোচনা হিসেবেও আমেরিকার পার্লামেন্টে এই কোরআন তেলোয়াত অথবা বুঝতে পেরেছেন যে, মুসলমানগণ কোনো ভুল পথে চলছেন না। এটাই যথার্থ পথ।

মহামারি করোনা ভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স চীনকে পুরোপুরিভাবে দায়ী করে বেশ কয়েকদিন যাবত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভাইরাসকে ‘চাইনিজ ভাইরাস’ বলেছেন, এবং কিছুদিন পরে করোনাকে ‘উহান ভাইরাস’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ১৯.০৪.২০২০ইং তারিখে হোয়াইট হাউসে ব্রিফিং চলাকালে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাসের জন্য জেনেশুনে দায়ী হলে চীনকে অবশ্যই এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ট্রাম্প আরও বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর আগেই বন্ধ করা যেত। কিন্তু চীন তা করেনি। যার কারণেই পুরো বিশ্ব এখন ভুগছে। উহানে প্রথম দেখা দেয়া ভাইরাস নিয়ে চীনকে শায়েস্তা করতে চান কিনা, ব্রিফিংয়ে ট্রা¤পকে এ প্রশ্ন করা হয়েছিল। এর জবাবে তিনি বলেন যদি তারা (চীন) জেনে বুঝে করে অবশ্য অবশ্যই তাদের এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ট্রাম্প বলেন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ভুল ক্রমে হওয়া এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া কিংবা জ্ঞাতসারে তা করার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরও বলেন চীন এ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। চীনের তদন্তে কি বের হয় তা যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও এ নিয়ে তদন্ত করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

অন্যদিকে ফ্রান্সের নোবেল বিজয়ী ভাইরাস ও ওষুধ বিশেষজ্ঞ লুস মনটাগনিয়ার দাবি করেছেন, এই ভাইরাস মানুষের তৈরি। চীনের গবেষণাগারে এইড্স-এর ভ্যাকসিন তৈরির সময় এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। তবে এই দাবি অস্বীকার করেছে চীন। দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তার এক গবেষণাগারের পরিচালক ইউয়ান ঝিমিং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গবেষণাগার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কোন সুযোগ নেই। ফ্রান্সের এই গবেষকের দাবি একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর ব্যাপারে সেই পুরোনো কথাই বলেছেন ইউয়ান। তিনি বলেন, করোনা বন্য প্রাণির বাজার থেকেই ছড়িয়েছে। তবে লুস মনট্যাগনিয়ার ফ্রান্সের একটি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস ও ম্যালেরিয়ার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তার সন্দেহ এটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়নি। তবে আমেরিকা ও ফ্রান্সের কাছে চীনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন দালিলিক প্রমান নেই।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ চীনে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। চীনের আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যের সংখ্যা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। চীন এখনও স্পষ্ট করেনি করোনার জন্ম বৃত্তান্ত। যেহেতু চীন থেকে এর উদ্ভব। কিভাবে প্রথম ব্যক্তি আক্রান্ত হলো। কোত্থেকে আক্রান্ত হলো। জঘন্য খাদ্যাভ্যাস থেকে নাকি প্রাকৃতিকভাবে। এটা বিশ্ববাসীকে বয়ান দিতে পারে একমাত্র চীন। চীন যদি কোন সত্য গোপন না করে থাকে তাহলে চীন বলে দিক যে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া মানব সম্প্রদায়ের জন্য মহামারি। চীন বারবারই বলতে চাচ্ছেন যে এই করোনা ভাইরাস বাদুরের মাধ্যমে মানব দেহে সংক্রামণ হয়েছে। এখানে চীন জাতির কাছে একটা প্রশ্ন করাই যেতে পারে কেন আপনারদের খাদ্য তালিকায় এই জঘন্য খাবার। ধর্ম যে প্রাণিগুলো খেতে অনুমোদন দিয়েছেন সেগুলো খেলে পৃথিবীতে এই গজব নেমে আসত না। শতাব্দীর পর শতাব্দী এই জঘণ্য খাদ্যাভাস থেকেই পৃথিবী আজ ঝুঁকিতে। প্রকৃতিকে সুন্দর করে রাখার জন্য আল্লাহ পৃথিবীতে বহু প্রাণি সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তায়ালা কিছু প্রাণি খাবারের জন্য অনুমোদন দিয়েছেন বাকি সব বিপজ্জনক। চীনের জনগণ জেনেশুনে সর্বদা এই বিপজ্জনক খাবারগুলোই খেয়ে থাকেন। ফলশ্রুতিতে চীন আজ গোটা পৃথিবীর কাছে অভিয্ক্তু। চীনকে আমেরিকা ও ফ্রান্সের অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে এর জন্য চরম মূল্য দিতে হতে পারে। চীন প্রযুক্তিগতভাবে অনেক সমৃদ্ধ। প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তির লাইফ হিস্টরির অন্তিম মুহূর্তের পূর্ব থেকে কিছু সময় নিয়ে গবেষণা করে সত্যি ঘটনার আদ্যপান্ত খোলাসা করুক। চীন না চাইলে এই গোপনীয়তা অন্যদের পক্ষে উদ্ধার করা পাহাড়সম কঠিন। 

যতই দিন যাচ্ছে বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাবনায় ফেলে দিয়েছে গোটা মানব সম্প্রদায়কে। জাতিসংঘ বারবার আমাদের সংকেত দিচ্ছেন “গোটা দুনিয়া এক নতুন অর্থনীতির সামনে হাজির হবে, বিশ্বে ৫০ কোটি লোক গরীব হবে, ধারণা করা হচ্ছে তিন কোটি লোক ক্ষুধায় মারা যাবে”, আবার কখনও বলছেন ৩০টি দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে। করোনার শক্তিশালী থাবায় ক্ষত বিক্ষত পৃথিবীর শ্রেষ্ট শক্তিশালীরা আগামী দিনগুলোতে রাজ্য নয়, লড়াই করবে ক্ষুধার বিরুদ্ধে। 

মানব সম্প্রদায় যখন অতিমাত্রায় দাম্ভিকতার মধ্যে ঢুকে যায় এবং চরম সীমায় পৌঁছে যায় তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে গজব বা মহামারি অনিবার্য হয়ে যায়। আমরা কোন ভাবেই ভূলে যাইনি আল্লাহ তায়ালা আবরাহার হস্তি বাহিনীকে কিভাবে জীবের চিবন্ত ভূষিতে পরিণত করে দিয়েছিলেন তার ইতিহাস। ভুলে গেলে চলবে না হয়রত মূসা (আ:) এর সময় পথভ্রষ্টদের সাথে আল্লাহ কি কি করেছিলেন। মনে রাখতে হবে আদ ও সামুদ জাতির ইতিহাস। আমরা হয়তো চরম অপরাধ করে ফেলেছি তার জন্যই এ শাস্তি। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অনুশোচনা, আত্মসমর্পন ও নিজেদের আত্মশুদ্ধির মাস পবিত্র রমজান হাজির হয়েছে। এই তো সুযোগ! এই বিপদ থেকে পরিত্রাণের জন্য বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করার। ইনশাআল্লাহ! আমরা এ বিপদ থেকে পরিত্রাণ পাব। অবশ্যই আল্লাহ আমাদের এ গজব থেকে মুক্ত করবেন। আল্লাহ ক্ষমা করে দিলে আমাদের কোনদিনই ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজন হবে না। কোন অভাবই মুসলিম বিশ্বকে স্পর্শ করবে না।

লেখক : কলামিস্ট  
E-mail: [email protected]
 

Powered by