চট্টগ্রাম

রায়পুরে টেলিফোনে কথা বলার লোক নেই, এক্সচেঞ্জ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

  প্রতিনিধি ৯ মে ২০২৩ , ৭:৪৩:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

সুদেব কুরী, রায়পুর (লক্ষীপুর) প্রতিনিধি :

লক্ষীপুরের রায়পুরে বিটিসিএল’র ল্যান্ডলাইন ব্যবহার করে টেলিফোনে কথা বলার লোকের সংখ্যা কমছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড’র (বিটিসিএল) ২৫৬ গ্রাহক ধারণ ক্ষমতার ডিজিটাল এক্সচেঞ্জটিতে এখন মাত্র ১৬০টি সংযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ২০-৩০টি সব সময়েই অকেজোই থাকে। এর আগে ৫০০ সংযোগের এক্সচেঞ্জেও একই অবস্থা ছিল।

আড়াই বছর ধরে এটিকে ৫ ডিজিটের সংখ্যা থেকে ১১ ডিজিটের সংখ্যায় রূপান্তরিত করা হয়। লোকবল সংকট ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে অফিসটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অপরদিকে নিরাপত্তা প্রাচীর না থাকায় অংরক্ষিত থাকে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও স্থাপনা। ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লাইনম্যান, জুনিয়র অয়্যারম্যান ও নৈশপ্রহরীকে। ১০-১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৩ জন। ২০০৮ সালে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটিকে কোম্পানীতে রূপান্তরিত করা হয়।

অপরদিকে বিটিসিএল’র উপজেলা এক্সচেঞ্জ দিয়ে সহস্রাধিক গ্রাহককে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সক্ষমতা থাকলেও তা হয়নি। লোকবলের অভাবে স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট সেবাটিও চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়ভাবে রায়পুর সরকারি কলেজ, উপজেলা নির্বাচন অফিস ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংস্থাটির ইন্টারনেট সংযোগ চলছে। সংযোগগুলোতে নিম্নমাত্রার গতি থাকায় তারাও এটির সুফল পাচ্ছেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মধ্যবর্তী এলাকায় টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যলয়টিতে অযতœ-অবহেলার সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। দরজা জানালা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের চারপাশে আগাছা ও গাছের কারণে ভ‚ঁতুরে অবস্থা বিরাজ করছে। নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে এটি।

২০০৭ সালে রায়পুর অ্যানালগ পদ্ধতির টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি প্রায় ৫শ’ সংযোগের ডিজিটাল এক্সচেঞ্জে রূপান্তরিত হয়। প্রাথমিকভাবে ২শ’ টেলিফোন সংযোগ দিয়ে চালু করা হয়। চালুর পর নতুন সংযোগ বাড়লেও কাঙ্খিত সেবার অভাবে দিন দিন তা কমতে থাকে। টেলিফোন বিভাগের সেবার মান নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করায় টেলিফোন ছাড়ার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

রায়পুর এক্সচেঞ্জে কর্মরত জুনিয়র অয়্যারম্যান জেসমিন আক্তার বলেন, ‘কাজের পরিবেশ না থাকা সত্তে¡ও কষ্ট করে হলেও আমাদেরকে দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে প্রায়ই আমাদেরকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।’

লাইনম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ‘মানুষের মধ্যে আগের মতো টেলিফোন ব্যবহারে আগ্রহ নেই। সীমিত লোকবল নিয়ে সকল গ্রাহককে আমরা সাধ্যমতো সেবা দিতে চেষ্টা করি। তারপরও মানুষ কেনো যেনো দেশীয় প্রতিষ্ঠানটির প্রতি অবহেলা করছে। ক্রমেই গ্রাহক সংখ্যা কমছে। যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোও খুব কম ব্যবহৃত হয়।’

ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রায়পুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আমানত হোসেন বলেন, ‘বিটিসিএল’র ইন্টারনেটে ধীর গতির কারণে আমরা খুব সমস্যায় আছি। বার বার বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। মোবাইলে কিছুটা গতি থাকলেও ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারে আমরা এটি ব্যবহার করতে না পারায় আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটছে।’

ল²ীপুর টেলিকম উপ-বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সহ¯্রাধিক গ্রাহককে আমরা ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু লোকবল না থাকায় আমরা স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট সংযোগ দিতে পারছিনা। আমরা কর্পোরেটভাবে বড় বড় গ্রাহক সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছি। ভবনটি সংস্কারে বরাদ্দ প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by