রংপুর

লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙনে বাঁধ বিলীন

  প্রতিনিধি ১১ জুন ২০২১ , ৮:৪৭:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় তিস্তার তীরে স্থানীয়দের সহায়তায় গড়া বালুর বাঁধের অর্ধকিলোমিটার নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। স্থানীয়রা জানান, শুস্ক মৌসুমে তিস্তা নদী মরুভূমিতে পরিণত হলেও বর্ষার শুরুতে উজানের ঢলে ফুলে ফেঁপে উঠে হিংস্র রুপ ধারণ করে তিস্তা নদী। প্রতিবছর তীর ভেঙে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে পথে বসছে তিস্তাপাড়ারের হাজার হাজার পরিবার। জন্মলগ্ন থেকে তিস্তা নদী খনন না করায় সামান্য পানিতে দু’কূল উপচিয়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে। চরম দুর্ভোগে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। দুর্ভোগ লাঘবে নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

নিজেদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসীর সহায়তায় প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘের একটি বালুর বাঁধ তৈরি করা হয়। স্থানীয়রা তাদের সামর্থ অনুযায়ী সহায়তা করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে বাঁধটি নির্মাণ নির্মিত হয়। বাঁধ নির্মাণ হওয়ায় আশায় বুক বাঁধে নদী তীরবর্তি কুটিরপাড়, বালাপাড়া ও চৌরাহা এলাকার কয়েক হাজার পরিবার।
তবে গত ৩দিনে তিস্তার প্রবল স্রোতে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হয়ে যায়। বাঁধটি বিলীন হওয়ার পর থেকে গত ৩ দিনে প্রায় ১০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন। তারা তাদের ঘর বাড়ি ও আসবাবপত্র উচু রাস্তায় বা অন্যের উঠানে স্তুপাকারে রেখেছেন। জমির অভাবে তারা ঘর তুলতে পারছেন না। বাঁধটি এবং পাশের গ্রাম তিনটি রক্ষায় জরুরী ভিত্তিতে ১০ হাজার জিও ব্যাগ প্রয়োজন বলে স্থানীয়দের দাবি।

কুটিরপাড় এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রামবাসরী সহায়তা বালুর বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটি হওয়ায় আশা করেছিলাম এ বছর আর নদী ভাঙনের মুখে পড়তে হবে না। পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবো। কিন্তু বর্ষার শুরুতে পানির চাপে ৩দিনের ব্যাবধানে বালুর বাঁধটি বেশির ভাগ অংশই বিলীন হয়েছে। বাঁধটি বিলীন হলে বাড়িঘর নদীর মুখে পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়েছি। দুইদিন আগেও পরিবার নিয়ে যেখানে ঘুমাতাম আজ সেখানে নদীর স্রোত বইছে। বাকী অংশটুকু রক্ষা করা সম্ভব না হলে বর্ষার আগে কুটিরপাড়, চৌরাহা ও বাদিয়ারটারী গ্রাম বিলীন হতে পারে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে অর্থ ও ঢেউটিন মজুদ আছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা ইউএনও তা বিতরণ করবেন। আর বালুর বাঁধটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেয়া আছে। নদী ভাঙনের সর্বশেষ তথ্য সার্বক্ষনিক মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হচ্ছে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by