যে ঝুমন দাস আপনের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান।

রোববার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, হামলাকারী এবং ফেসবুকে স্ট্যাটাসদানকারীদের এদের কারো কারো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। সেগুলো তদন্তে বেরিয়ে আসবে। কে কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, সেটিও পুলিশ দেখবে।

যার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে এই ঘটনা সেই ঝুমন দাস আপন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত জানিয়ে তিনি বলেন, সে শাল্লা উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার ফেসবুক আইডি থেকে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দেবার পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।

এসপি বলেন, এরপরও কেন মসজিদে মসজিদে প্রচার দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গ্রামে হামলা হয়েছে সেটি নিবিরভাবে তদন্ত করছে পুলিশ। শাল্লার ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ যাতে এই অঞ্চলে আর কোনদিন না ঘটাতে পারে কেউ, সেই ধরনের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে পুলিশ। ঝুমন দাস আপনের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জের ধরে মামুনুল হক সমর্থকরা ওখানে হামলা করার পর ফেসবুকে লাইভ দিয়ে নিজেদের অপকর্ম নিজেরা বলে গেছে। এসব ভিডিও ফুটেজ পুলিশের কাছে আছে। অনেকগুলো ভুয়া ফেসবুক আইডি তাৎক্ষণিক খোলা হয়েছিল, সেগুলোও ব্লক করিয়ে রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, অন্যায়ভাবে দুর্বল মানুষের উপর শত শত মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে হামলার ঘটনায় দায়ী কেউ রেহাই পাবে না। পুলিশের অবস্থান নিরীহ মানুষের পক্ষে সর্বাবস্থায় থাকবে।

ঘটনার আগের দিন উত্তেজিত মানুষদের দাবির প্রেক্ষিতে ঝুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর উত্তেজিতরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ না করারও প্রতিশ্রুতি দেয়। রাতে নোয়াগাঁও গ্রামের পাশের দারাইন বাজারে শাল্লা থানা হতে একজন এসআইসহ ৭ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

গ্রামবাসীকে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার অনুরোধ জনিয়ে এসপি বলেন, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ওখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।